গত বছর রেকর্ড ৪৮১৩ প্রবাসী কর্মীর মরদেহ দেশে এসেছে

ইলাসট্রেশন: বিপ্লব চক্রবর্তী

গত বছর রেকর্ড ৪ হাজার ৮১৩ প্রবাসী কর্মীর মরদেহ দেশে। এর আগে, ২০২৩ সালে দেশে এসেছিল ৪ হাজার ৫৫২ প্রবাসকর্মীর মরদেহ।

ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তবে পরিসংখ্যানে কোন দেশ থেকে কতজনের মরদেহ এসেছে তা আলাদা করা হয়নি।

২০২১ সালে ৩ হাজার ৮১৮ এবং ২০২২ সালে ৩ হাজার ৯০৪ বাংলাদেশি অভিবাসীর মরদেহ দেশে এসেছিল।

ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের ওয়েবসাইটে গত ১৪ জানুয়ারী এই পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়।

প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি উন্নত জীবনের স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে যান। তাদের অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে মারা যান।

তবে, তাদের সবার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানানো হয়নি পরিসংখ্যানে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৯৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ৫৬ হাজার ৭৬৯ প্রবাসীকর্মীর মরদেহ দেশে এসেছে।

বাংলাদেশী অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক জাছিয়া খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিদেশে অনেক বাংলাদেশি কর্মী অল্প বয়সে কাজ করতে গিয়ে মারা যান। তাদের মৃত্যুর পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে।'

'কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা আছে, কারণ শ্রমিকদের আবাসন হয় নিম্নমানের। তাছাড়া, বিদেশে যাওয়ার খরচ উঠাতে তারা ব্যাপক চাপ নেন, অতিরিক্ত কাজ করেন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার খান না,' বলেন তিনি।

জাছিয়া খাতুন আরও বলেন, 'মৃত্যু সনদে সাধারণত "হার্ট অ্যাটাক" উল্লেখ থাকে। তবে মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে জানার জন্য আরও পরীক্ষা করা উচিত।'

এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'বিদেশে বাংলাদেশি মিশনগুলো এ ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা থাকতে পারে।'

ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড প্রবাসীকর্মীদের মৃত্যুর পরিসংখ্যান রাখে এবং কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে দাফন ও পরিবহন খরচ হিসেবে প্রতি মরদেহের জন্য ৩৫ হাজার টাকা দেয়।
এছাড়া, ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতিটি মৃত্যুর জন্য ৩ লাখ টাকা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।

ওয়েজ আর্নার্স বোর্ডের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই ২০১৬ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত দেশে মোট ১৭ হাজার ৮৭১ মরদেহ এসেছে যার ৬৭ দশমিক ৪ শতাংশ এসেছে উপসাগরীয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কুয়েত, কাতার ও বাহরাইন থেকে।

এর মধ্যে সৌদি থেকে ৫ হাজার ৬৬৬ জন, আমিরাত থেকে ১ হাজার ৯১৩ জন ও ওমান থেকে ১ হাজার ৮৯৩ মরদেহ এসেছে।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বিদেশ গেছেন মোট ১ কোটি ৬০ লাখ কর্মী, যাদের ৭৬ দশমিক ৩ শতাংশই গেছেন উপসাগরীয় ৬ দেশে।

Comments

The Daily Star  | English

A night of stars and stories

Blender’s Choice–The Daily Star OTT & Digital Content Awards returned for its fourth edition yesterday

7h ago