চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট কমাচ্ছে বিমান, বাজার যাচ্ছে বিদেশি এয়ারলাইন্সের দখলে

চাহিদা থাকলেও চট্টগ্রাম থেকে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট কমাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে বিমান কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম-জেদ্দা রুটে একটি ফ্লাইট কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত এই এয়ারলাইন্স ফ্লাইট কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পর একদিন পর গত শুক্রবার বিদেশি এয়ারলাইন্স সালাম এয়ার শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নতুন করে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছে।
এভিয়েশন সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, যাত্রীদের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বিমান কর্তৃপক্ষ ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
এতদিন প্রতি সপ্তাহে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের তিনটি ফ্লাইট যাতায়াত করতো। এর মধ্যে প্রতি বুধবারের ফ্লাইটটি আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে আর পরিচালনা করবে না বিমান।
বিমান কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম-মদিনা এবং চট্টগ্রাম-জেদ্দা রুটে বিমানের ফ্লাইটের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
ফ্লাইট কমানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) চট্টগ্রাম জোনের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ আলম।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অতীতে আমরা বারবার বলেছি চট্টগ্রাম-জেদ্দা ও চট্টগ্রাম-মদিনা রুটে আরও বেশি ফ্লাইট বাড়ানো দরকার। সেখানে উল্টো কাজ করেছে বিমান। এই রুটে এত চাহিদা থাকার পরও ফ্লাইট কমানো হচ্ছে।'
চট্টগ্রামের যাত্রীদের সঙ্গে বিমাতা সুলভ আচরণ করা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'বিমানের এমন সিদ্ধান্তে ওমরাহ যাত্রীরা চরম বেকায়দায় পড়বে। তাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় এবং শারীরিক ও মানসিক ভোগান্তি হবে।'
এজেন্সিগুলোর তথ্যমতে, বছরের শেষ দিকে পবিত্র ওমরাহ পালনকারী যাত্রীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় একটু বেশি থাকে। সৌদি আরব রুটে সাধারণ যাত্রী এবং ওমরাহ যাত্রীদের চাপে আসন সংকট তৈরি হয়।
ওমানের বেসরকারি এয়ারলাইন্স সালাম এয়ার কর্তৃপক্ষ এতদিন প্রতিদিন একটি করে সপ্তাহে মোট সাতটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। চট্টগ্রাম থেকে ওমানের মাস্কাট রুটে এয়ারলাইন্সটি আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে সপ্তাহের প্রতি সোম, বুধ ও শুক্রবার অতিরিক্ত তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে বিমানের ফ্লাইট কমে যাওয়ায় সৌদি আরবের জেদ্দা, কুয়েত ও কাতারের দোহাগামী যাত্রীরা সালাম এয়ারের ফ্লাইটে মাস্কাট হয়ে ট্রানজিটে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপক আল মামুন ফারুক বলেন, 'এয়ারক্রাফট সংকটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে জেদ্দা রুটে ফ্লাইট কমানো হয়েছে।'
সালাম এয়ারের চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপক রিজুয়ানুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যাত্রীদের চাহিদা বিবেচনায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০টিতে উন্নীত করা হয়েছে। এতদিন সপ্তাহে সাতটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হতো।'
Comments