বাজেট ২০২৫-২৬

প্লাস্টিক পণ্যে ভ্যাট হতে পারে দ্বিগুণ, ছাড় পেতে পারে পরিবেশবান্ধব পণ্য

প্লাস্টিক পণ্য
স্টার ফাইল ফটো

অন্তর্বর্তী সরকার প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে টেবিলওয়্যার ও রান্নাঘরের জিনিসপত্রের ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ করতে পারে।

এ দিকে, পরিবেশবান্ধব বিকল্প যেমন—পোড়া মাটির প্লেট, গাছের উপকরণ ও পচনশীল উপাদানের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন—পরিবেশবান্ধব শিল্পোদ্যোগের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্যই এই ছাড়।

এ ছাড়াও, পরিবেশবান্ধব পণ্য যেমন—সুপারি, শাল, সিয়ালি ও পলাশ পাতা উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের জন্য হারমোনাইজড সিস্টেম (এইচএস) কোড ব্যবহারের পরিকল্পনা আছে সরকারের।

অপর এক কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে জানান, এসব কাঁচামালে পাঁচ শতাংশ শুল্ক আরোপের ভাবনা আছে।

তিনি আরও বলেন, 'ডেডিকেটেড এইচএস কোড না থাকায় বর্তমানে প্লাস্টিক পণ্যের পাশাপাশি এগুলোকে শ্রেণিবদ্ধ করা হয় বলে ২৫ থেকে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয়।'

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব প্রস্তাব দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্লাস্টিক পণ্যে সারাবিশ্বে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশে দূষণের মাত্রা আরও ভয়াবহ। তাই পরিবেশ নষ্ট করা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার কমাতে পরিবেশবান্ধব বিকল্প পণ্য উৎপাদনে উৎসাহিত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

তবে সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা—দেশে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার কমে গেলে উৎপাদনকারী ও ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

'এমন সিদ্ধান্তের ফলে এই শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে' উল্লেখ করে বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি শামীম আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাধারণত কম আয়ের মানুষ প্লাস্টিক পণ্য বেশি ব্যবহার করে থাকেন। ভ্যাট বাড়িয়ে দিলে পণ্যের দাম বাড়বে ও বিক্রি কমবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ফুটপাতের বিক্রেতাদের জীবন-জীবিকার ওপর প্রভাব পড়বে।'

দেশে প্লাস্টিক পণ্যের বিক্রি আনুমানিক ৪০ হাজার কোটি টাকা। প্রায় ছয় হাজার উদ্যোক্তা আছেন। তাদের বেশিরভাগই ক্ষুদ্র ও মাঝারি। প্রায় ১৫ লাখ মানুষ এই শিল্পে কাজ করছেন।

সরকার যদি টেবিলওয়্যার ও কিচেনওয়্যারের কথা উল্লেখ করে তাহলে বেশিরভাগ প্লাস্টিক পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়বে। তিনি সরকারকে এটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

এসব উদ্বেগের পরও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা বলছেন, প্লাস্টিক খাতের কর সুবিধার সময় পেরিয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ শিল্প এখন বেশ শক্তিশালী। স্থানীয়ভাবে তৈরি প্লাস্টিক পণ্য প্রায় সব বাড়িতেই আছে। আমাদের অবশ্যই আরও টেকসই পণ্যে প্রণোদনা দিতে হবে।'

এ ছাড়াও, আগামী বাজেটে রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনারের (এসি) ওপর ভ্যাট দ্বিগুণ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দুটি পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট সাড়ে সাত শতাংশ।

সূত্রটি জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত এসব পণ্যে ভ্যাট ছিল পাঁচ শতাংশ।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা বাড়িয়ে সাড়ে সাত শতাংশ করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

BNP says ‘no’ to constitutional reforms under interim govt

The BNP has said it will not support any constitutional reforms before the national election in February 2026, arguing that such changes must be made by the next parliament.

5h ago