তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ায় বাড়ছে সুতার দাম

ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমের দেশগুলোয় মূল্যস্ফীতি কমে যাওয়ায় সেখান থেকে তৈরি পোশাক বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো ওয়ার্ক অর্ডার বেড়েছে। ফলে দেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের কাছে সুতার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গত ২ সপ্তাহ ধরে অভ্যন্তরীণ বাজারে বাড়তি সুতার দাম।

করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলে পোশাক বিক্রি কমে যায়। এখন ক্রেতারা নতুন কাপড় কিনতে শুরু করায় বাজার আবার চাঙ্গা হয়েছে।

আগের স্থবিরতা কাটিয়ে উঠায় পোশাক রপ্তানিকারকরা আশা করছেন, রপ্তানির জন্য শীর্ষ দেশগুলো থেকে ওয়ার্ক অর্ডার আরও ভালোভাবে আসতে শুরু করবে। ক্রেতারা চীনের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে বেছে নেওয়ায় সেই আশা জোরদার হচ্ছে।

বর্তমানে যে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হচ্ছে তা আগামী বছরের মার্চের জন্য। আগামী জানুয়ারিতে বাংলাদেশ থেকে এসব পোশাকের শিপমেন্ট শুরু হবে।

দাম কম হওয়ায় বেশি ব্যবহৃত ৩০ কার্ডেড সুতা এখন কেজিপ্রতি সাড়ে ৩ ডলার থেকে ৩ ডলার ৬০ সেন্টের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগে এর দাম ছিল ২ ডলার ৯০ সেন্ট থেকে ৩ ডলার ১০ সেন্ট।

একইভাবে ভালোমানের কাপড় ও পোশাকের জন্য ব্যবহৃত ৩০ কম্বড সুতা প্রতি কেজি ৪ ডলার থেকে ৪ দশমিক শূন্য ৫ ডলারের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগে তা ছিল সাড়ে ৩ ডলার থেকে ৩ ডলার ৬০ সেন্ট।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমানে বিপুল পরিমাণ ওয়ার্ক অর্ডার আসায় সুতার দাম বাড়ছে।'

তিনি আরও বলেন, 'তবে অক্টোবরে শুরু হওয়া ক্রিসমাস শিপমেন্টগুলো খুব বেশি নাও পাওয়া যেতে পারে। কেননা, দোকানগুলোর অনেক কাপড় এখনো বিক্রি হয়নি।'

তিনি জানান যে মহামারির পরে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় রপ্তানিকারকরা তাদের উত্পাদন ২৫ শতাংশ বাড়ানোয় সেগুলো এখন ব্যবহার করা হচ্ছে।

তার মতে, বিদেশি ক্রেতারা ৪৫ থেকে ৬০ দিন সময় বেঁধে দেওয়ায় স্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারকরা আমদানি করা সুতার পরিবর্তে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন। কেননা, আগে এই সময়সীমা ছিল ৯০ থেকে ১২০ দিন।

আউটপেস স্পিনিং মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিব হায়দার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগামী বসন্তে ব্যবহারের জন্য দেশে অনেক ওয়ার্ক অর্ডার আসায় সুতার চাহিদাও বাড়তে শুরু করেছে।'

তবে এই চাহিদা কতদিন থাকবে 'তা দেখার বিষয়' বলে মনে করেন তিনি। কেননা, এর আগে দেখা গেছে যে চাহিদা বাড়ার পর তা হঠাৎ কমে যায়।

দেশীয় বাজারের জন্য সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ডেইলি স্টারকে জানান, রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ উভয় বাজারেই সুতা বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে।

তার মতে, 'নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জের মতো বড় বড় তাঁতশিল্প এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে উন্নতি হওয়ায় সুতার চাহিদা বেড়েছে।'

টেক্সটাইল মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মজুদে থাকা পুরাতন সুতার চাহিদাও বেড়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'শিল্প-কারখানায় গ্যাস ঘাটতির কারণে বেশিরভাগ স্পিনিং মিল ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে চলছে।'

তবে বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সুতা বিক্রির হার এখনো কম।'

Comments

The Daily Star  | English

Ignore Gen Z at your peril, experts tell Nepal govt

Prominent personalities warn government and parties not to dismiss the demands of youths

1h ago