৩ মাসে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১৮ শতাংশ

স্টার ফাইল ছবি

গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও দেশে শ্রমিক অসন্তোষ সত্ত্বেও দেশের পোশাক শিল্পের বিকাশ অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এটি আগের প্রান্তিকের তুলনায় নয় শতাংশ বেশি।

আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ১৮ দশমিক ছয় শতাংশ।

সম্প্রতি প্রকাশিত তৈরি পোশাক নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ত্রৈমাসিক পর্যালোচনায় বলা হয়, পশ্চিমের দেশগুলোর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দোকানগুলোয় ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে কার্যাদেশ বাড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়—দেশের পোশাক খাতকে মূল্যস্ফীতির চাপ, বিঘ্নিত সরবরাহ ব্যবস্থা, জ্বালানি তেলের অস্থিতিশীল দাম ও বাড়তি পরিবহন খরচের মতো সংকট মোকাবিলা করতে হয়েছে। তবে প্রধান রপ্তানি বাজারগুলোয় পোশাকের চাহিদা বেশি ছিল।

গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর ব্যাপক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।

গণআন্দোলনের পরপর শ্রমিক অসন্তোষের কারণে গত জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে পণ্য রপ্তানি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে মহামারির ঠিক পরে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সুদূরপ্রসারী প্রভাবের কারণে গত কয়েক বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। ফলে ক্রেতাদের চাহিদা কমে যায়।

তবে পশ্চিমের দেশগুলোর অর্থনীতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোয় সেখানে পোশাকের খুচরা বিক্রি বেড়েছে।

'বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পোশাক প্রস্তুতকারক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে' জানিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, 'কম শ্রম খরচ ও শক্তিশালী সরবরাহ ব্যবস্থার কারণে এই খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।'

এ প্রান্তিকে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) পোশাক খাতের অবদান ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়—যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, কানাডা ও বেলজিয়াম বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রধান গন্তব্য।

এসব দেশে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মোট পোশাকের প্রায় ৭০ শতাংশ রপ্তানি হয়েছে।

আগের প্রান্তিকের তুলনায় সেসব দেশ থেকে আয় বেড়েছে সাত দশমিক ১৩ শতাংশ।

এর মধ্যে নিটওয়্যার রপ্তানি আগের প্রান্তিকের তুলনায় দুই দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে পাঁচ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আগের বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮ শতাংশ।

ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ক্রেতাদের খরচ বেড়ে যাওয়ায় ওভেন পোশাক রপ্তানি ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়ে রপ্তানি চার দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে—ওভেন পোশাক রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেতাদের কেনাকাটা বেড়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়—সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়া ও কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় তৈরি পোশাক খাত অব্যাহতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তুলা, কৃত্রিম সুতা, তুলার সুতা ও কাপড়ের মতো কাঁচামালের আমদানি মূল্য চার দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার। এটি মোট পোশাক রপ্তানি আয়ের ৩৯ শতাংশ।

নিট রপ্তানি আয় হয়েছে ছয় দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। এটি আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১২ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে—বৈশ্বিক চাহিদা ও উৎপাদন দক্ষতা বেড়ে যাওয়ায় চলতি অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বরে দেশের পোশাক খাতে শক্তিশালী স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Unveil roadmap or it’ll be hard to cooperate

The BNP yesterday expressed disappointment over the absence of a clear roadmap for the upcoming national election, despite the demand for one made during its recent meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus.

6h ago