জলবায়ু তহবিলের অর্ধেকের বেশিই দুর্নীতিতে লোপাট: টিআইবি
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় গঠিত তহবিলের অর্ধেকের বেশি অর্থ লোপাট হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটির এক নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৮৯১টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা অর্থের মধ্যে ২৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের বেশি আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকায় নিজেদের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সময়ে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে মোট ৪৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলার অনুমোদন করা হয়। কিন্তু প্রকল্প বাছাই ও অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব এবং ট্রাস্টি বোর্ড ও কারিগরি কমিটির সদস্যদের মধ্যে যোগসাজশ বড় ভূমিকা রেখেছে। তহবিল ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা বিসিসিটি কর্মকর্তারাও এসব অনিয়ম প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছেন।
টিআইবির গবেষণায় প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক দীর্ঘসূত্রতার চিত্র উঠে এসেছে। পর্যালোচনা করা ৮৯১টি প্রকল্পের মধ্যে ৬২ শতাংশেরই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে; কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রায় দুই বছরের প্রকল্প শেষ হতে চার বছরের বেশি সময় লেগেছে। এমনকি চার বছর মেয়াদি কিছু প্রকল্প শেষ হতে ১৪ বছর পর্যন্ত সময় লেগেছে।
একই ধরনের বিলম্ব দেখা গেছে আন্তর্জাতিক অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোতেও। ৫১টি প্রকল্পের মধ্যে ৪১ শতাংশের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে প্রকল্প শেষ হতে গড় সময় ৫২ শতাংশ বেড়ে ২,৯৭৮ দিন বা আট বছরের বেশি হয়েছে।
টিআইবি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের বছরে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উৎস থেকে বছরে গড়ে মাত্র ৮ কোটি ৬২ লাখ ডলার পাওয়া গেছে, যা মোট চাহিদার মাত্র ০.৭ শতাংশ।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০০৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বৈদেশিক উৎস থেকে মাত্র ১২০ কোটি ডলার পেয়েছে।
তিনি বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা যে মাত্রার ক্ষতির সম্মুখীন, তার তুলনায় এই পরিমাণ অর্থ নিতান্তই নগণ্য।'


Comments