হুতি হামলায় দ্বিতীয় জাহাজডুবি, জোরালো ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান মালিকদের

লোহিত সাগরে হুতিদের হামলায় ডুবে যাওয়া গ্রিসের মালিকানাধীন কয়লাবাহী জাহাজ ‘টিউটর’। ছবি: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে নেওয়া/ মেরিন লিংক

ইসরায়েল-হামাস চলমান যুদ্ধে হামাসের পক্ষ নিয়ে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোয় ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দ্বিতীয় জাহাজডুবিতে বিচলিত জাহাজ মালিকরা।

গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, জাহাজ মালিকরা আশা করছেন লোহিত সাগরে হুতিদের হামলা ঠেকাতে জোরালো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের রক্তক্ষয়ী আক্রমণের পর গাজাবাসীর ওপর তেল আবিবের নির্বিচার বোমা হামলার প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনিদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে ইরান-সমর্থিত হুতিরা। এই গোষ্ঠী গত নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েই চলছে।

হুতিরা এখন পর্যন্ত একটি বাণিজ্যিক জাহাজ ও এর কর্মীদের আটক করেছে। এমনকি, তাদের হামলায় অন্তত তিন জাহাজকর্মী নিহত হয়েছেন।

বিশ্বের জাহাজ পরিচালনাকারী শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, 'এটা খুবই দুঃখজনক যে নিরপরাধ জাহাজকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। জাহাজকর্মীরা তো শুধু তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে সারাবিশ্বে অন্ন-বস্ত্র পৌঁছে দেওয়া।'

এতে আরও বলা হয়, 'এসব হামলা এখনই থামাতে হবে। জাহাজকর্মীদের রক্ষায় আমরা সব দেশকে তাদের প্রভাব খাটাতে বলছি। দ্রুত সংঘাতময় লোহিত সাগরে শান্তি ফিরিয়ে আনার অনুরোধও করছি।'

গত সপ্তাহে লোহিত সাগরে গ্রিসের মালিকানাধীন কয়লাবাহী জাহাজ 'টিউটর' হুতিদের হামলায় ডুবে যাওয়ার বিষয়টি গতকাল নিশ্চিত করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, জাহাজটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরকবাহী দূরনিয়ন্ত্রিত নৌকা দিয়ে হামলা চালানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক নৌ সেনারা পণ্যবাহী জাহাজগুলোকে রক্ষায় লোহিত সাগরে নিয়মিত টহল দিলেও হুতিদের হামলার সংখ্যা অনেক বেড়েছে।

গতকাল বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর সূত্র সংবাদ সংস্থাটিকে বলেছে, হুতিদের দূর নিয়ন্ত্রিত নৌকা দিয়ে হামলার কারণে উদ্বেগ বেড়ে গেছে।

এক সূত্রের ভাষ্য, 'ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে জাহাজগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।'

ভেসেল প্রটেক্ট'র বিমা বিশেষজ্ঞ মুনরো অ্যান্ডারসন জানিয়েছেন যে গত মে মাসে হুতিরা পাঁচবার হামলা চালালেও চলতি জুনে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০-এ।

তিনি বলেন, 'এই প্রথম মানুষহীন দূর নিয়ন্ত্রিত নৌকা দিয়ে সফলভাবে হামলা চালানোয় আশঙ্কা হচ্ছে। এমন জটিল পরিস্থিতিতে ঝামেলা আরও বাড়ছে।'

এসব হামলার কারণে জাহাজের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার খরচ বেড়েছে। দ্বিতীয় জাহাজডুবির কারণে যে খরচ আরও বেড়ে যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

হামলা থেকে রক্ষা পেতে পণ্যবাহী জাহাজগুলোকে আফ্রিকার দক্ষিণে উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে ইউরোপে যাওয়া-আসাটাই যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করছেন ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের মহাসচিব স্টেফেন কটন।

'তবে যথাযথ নিরাপত্তা পেলে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব' বলেও মনে করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

2h ago