সহযোগী ইতালি প্রতিষ্ঠানের ২৭ কোটি টাকা ক্ষতি সমন্বয়ে জনতার আবেদন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘না’

জনতা ব্যাংক

ইতালিতে অবস্থিত সহযোগী প্রতিষ্ঠান জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি (জিইসি) এসআরএল-এর চার বছরের ক্ষতি সমন্বয়ে ব্যাংকটির আবেদন নাকচ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি প্রভিশন থেকে ক্ষতির টাকা সমন্বয়ের অনুমতি চেয়েছিল।

সম্প্রতি জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক অবস্থায় ফিরতে পারে কিনা, তা পর্যালোচনার ভিত্তিতেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে পরবর্তীতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জনতা ব্যাংক এর আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জিইসির মোট ১৯ লাখ ৬২ হাজার ৯০২ ইউরো ৪৩ সেন্ট (প্রায় ২৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা) ক্ষতি সমন্বয়ের অনুমতি চায়।

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, এই পুরো ক্ষতির পরিমাণ সমন্বয়ের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।

২০০২ সালে রোমে কার্যক্রম শুরু করে জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি। পরে মিলানেও একটি শাখা খোলে। ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালের পর থেকে আর লাভের মুখ দেখতে পায়নি জিইসি। ২০২৩ সালে ৫ লাখ ৯ হাজার ৮৩ ইউরো ক্ষতির পর ২০২৪ সালে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ লাখ ৯৫ হাজার ২৩ ইউরো।

কোম্পানির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে জিইসি বেতন, সামাজিক নিরাপত্তা, অবসরভাতা ও প্রশাসনিক ব্যয়ে ৮ লাখ ১০ হাজার ২৯ ইউরো খরচ করেছে। যদিও কমিশন, আর্থিক কার্যক্রম, সম্পদ বিক্রয় ও অন্যান্য উৎস থেকে আয় করেছে মাত্র ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৮২ ইউরো।

এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ৬ লাখ ৩ হাজার ৯৪৭ ডলার (প্রায় ৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা) আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ার পর জনতা ব্যাংক ২০২১ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত সহযোগী প্রতিষ্ঠান জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ইনকর্পোরেটেড (জিইসিআই) বন্ধ করে দেয়।

যোগাযোগ করা হলে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনি এই মুহূর্তে কোনো প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে না।

জনতা ব্যাংকই একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক নয়, যার বিদেশি সহযোগী প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। ২০২২ সালে সোনালী ব্যাংকের বিদেশি শাখা সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেডও তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।

বর্তমানে ২২টি দেশে প্রায় ২০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক শাখা, এক্সচেঞ্জ হাউস ও অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। তবে ক্রমাগত ক্ষতির কারণে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের বিদেশি কার্যক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, স্থানীয় ব্যাংকগুলোর বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর দুর্বল পারফরম্যান্সের মূল কারণ হচ্ছে উচ্চ পরিচালন ব্যয়, বাজার সমীক্ষার ঘাটতি, হুন্ডি চ্যানেলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা এবং প্রযুক্তিগতখাতে বিনিয়োগের অভাব।

Comments

The Daily Star  | English

BNP opposes RPO amendment requiring alliance parties to use own symbols

Salahuddin says the change will discourage smaller parties from joining coalitions

55m ago