পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন বাস্তবায়নে বেসরকারি খাত কাজ করছে: এফবিসিসিআই

লন্ডনের ম্যানশন হাউসে কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিটে বক্তব্য দিচ্ছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাত কাজ করছে বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। 

লন্ডনের ম্যানশন হাউসে কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২২ এ একটি গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

'ফিন্যান্সিয়াল অ্যান্ড প্রফেশনাল সার্ভিসেস – দ্য রোল অব স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড রেগুলেশনস অন দ্যা রোড টু নেট জিরো' শীর্ষক আলোচনায় অন্যতম বক্তা ছিলেন তিনি।

এ সময় এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, 'বিশ্বের সর্বনিম্ন নির্গমনকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও, নির্গমন নিয়ন্ত্রণের বৈশ্বিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৮৯ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন টন কমাতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যা ২১ দশমিক ৮৫ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইডের সমান।' 

এ লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ, পরিবহন, শিল্প, গৃহস্থালি, বাণিজ্যিক, কৃষি, ইটভাটা এবং ধাবমান নির্গমনের মতো জ্বালানি খাত থেকে ৯৬ দশমিক ১ শতাংশ নির্গমন কমাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। 
অবশিষ্ট ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কৃষি ও পশুসম্পদ, বনায়ন এবং নগরের কঠিন বর্জ্য থেকে কমানো হবে বলে জানান তিনি।

পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে বলে উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, 'পরিবেশবান্ধব মান বজায় রাখতে বাংলাদেশের শিল্পকারখানাগুলো উদ্ভাবনমূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে বাংলাদেশের বর্তমান অবদান মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ, কার্বন নির্গমনের অংশ মাত্র শূন্য দশমিক ০৯ শতাংশ।'

তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশের একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে যার মধ্যে ৯০টি উচ্চ অগ্রাধিকারসহ মোট ১১৩টি কর্মসূচি আছে। এগুলো বাস্তবায়নে ২০৫০ সাল নাগাদ ২৩০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।

মো. জসিম উদ্দিন আরও জানান, বিশ্ব অর্থনীতিকে কার্বন নিঃসরণের ক্ষেত্রে নেট-জিরোতে রূপান্তর করতে এবং জলবায়ু বিপর্যয় এড়াতে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ প্রয়োজন। 

জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘের ২৭তম কপ-২৭ সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়নের ওপর বাংলাদেশ জোর দিয়েছে উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, 'বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, সবুজ বা নীল বন্ডের মতো উদ্ভাবনী অর্থায়ন, ঝুঁকি স্থানান্তর প্রক্রিয়া বা বীমার সমন্বয়ের মাধ্যমে জলবায়ু অর্থায়নকে চালিত করা যেতে পারে। সবুজায়ন এবং বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়ন বহুপাক্ষিক তহবিল গঠন ভালো বিকল্প হতে পারে।'

অবকাঠামো, প্রযুক্তি, দক্ষতা এবং কার্যকরী ব্যবসায়িক মডেলগুলোর অনুসরণসহ ক্লিন এনার্জি সাপ্লাই চেইনের বিভিন্ন পর্যায়ে যৌথ অংশীদারিত্বের জন্য কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা এবং সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।

ইস্ট এন্ড কমিউনিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং সিটি অফ লন্ডনের অল্ডারম্যান ব্রোনেক মাসোজ্যাডার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই গোলটেবিল বৈঠকে ইউকে অ্যাক্রিডিটেশন সার্ভিসের চেয়ারম্যান লর্ড লিন্ডসে, ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ড ইনস্টিটিউশন বিএসআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুজান টেইলর মার্টিন, ইনস্টিটিউট অব এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এর ডিরেক্টর জেনারেল মার্কো ফরজিওন, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু প্রমুখ অংশ নেন।
 

Comments

The Daily Star  | English

Challenges in Policing: Police stations buckling under budget strain

The government also supplies police stations with some of the items they request each month, but only a portion of the demand is met.

12h ago