সরকারের অব্যবহৃত বিদেশি ঋণ বেড়ে ৪৮.৪৪ বিলিয়ন ডলার

অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, ইআরডি, বিদেশি ঋণ,

গত বছরের নভেম্বরে সরকারের অব্যবহৃত বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। একই বছরের জুনে যা ছিল ৪৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। এই অব্যবহৃত ঋণ বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকার পরও তা ব্যবহারের সক্ষমতা না থাকার ইঙ্গিত, যা দেশের জন্য কোনো ভালো লক্ষণ নয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবছরে বিদেশি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২৭ শতাংশ বাড়িয়ে ১১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে সরকার।

সুতরাং বলা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে বিদেশি ঋণ বিতরণের ধীরগতি সত্ত্বেও লক্ষ্যমাত্রা বেশি করা হয়েছে। যেখানে গত বছরের জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে ২ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার ব্যবহার করেছিল সরকার, যা তার আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ শতাংশ কম।

এছাড়া পুরো ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।

যদি বিদেশি ঋণ কম ব্যবহারের এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে চলতি অর্থবছর অব্যবহৃত ঋণের পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ বছরের জুনে চলতি অর্থবছর শেষ হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশি ঋণের প্রবাহ বেড়েছে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এই ঋণ ব্যবহারের সক্ষমতা সেভাবে বাড়েনি।

ইআরডির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে উন্নয়ন অংশীদারদের ফান্ড সহায়তায় ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত পাঁচ বছরে পাইপলাইনে প্রায় ৪৮ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি যোগ হয়েছে।

আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে এই ঋণ বিতরণের কথা আছে। তবে, এগুলোর বিতরণ সরাসরি প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত।

ইআরডির প্রতিবেদনে বলা হয়, উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ সহায়তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে তারা প্রতিনিয়ত উদ্যোগ নিচ্ছে।

বিগত কয়েক বছরে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে উইং পর্যায়ে ত্রৈমাসিক বৈঠক হয়েছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরের সময় ধীরগতির প্রকল্পগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।

এছাড়া, প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় তৈরি হওয়া বিভিন্ন সমস্যা শনাক্ত করতে একাধিকবার পরিদর্শন করে অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

ইআরডির এক কর্মকর্তা বলেন, পাইপলাইনে থাকা বিদেশি ঋণ কয়েক বছর আগে ৫০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। কিন্তু, বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ায় ঋণের আকার কমে এসেছে।

তিনি বলেন, কিছুদিনের মধ্যে নতুন সরকার দায়িত্ব নেবে, তারপর বিদেশি ঋণ ব্যবহারের ওপর আরও জোর দেওয়া হবে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সরকার ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার করেছে। যেখানে গত অর্থবছরে সরকার ২ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করেছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জন্য বিদেশি ঋণ সংকটের ঝুঁকি কম।

তবে, ইআরডির প্রতিবেদনে দেশের সামনে কিছু ঝুঁকির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট দেশে পরিণত করার লক্ষ্য অর্জনে অতিরিক্ত বিনিয়োগের চাহিদা তৈরি হয়েছে।

'অন্যদিকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দা, ইউরোপকেন্দ্রিক ঋণের জটিলতা ও পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সহজ ঋণের উৎস কমে গেছে।'

এতে আরও বলা হয়, এছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি গ্যারান্টির বিপরীতে ঋণ নেওয়ায় বিদেশি ঋণের ঝুঁকি ক্রমাগত বাড়ছে।

Comments

The Daily Star  | English

ACC to get power to probe corruption by Bangladeshis anywhere, foreigners in Bangladesh

The Anti-Corruption Commission (ACC) is set to receive sweeping new powers under a proposed ordinance that will allow it to investigate corruption by Bangladeshi citizens, both at home and abroad, as well as by foreign nationals residing in the country. .The draft Anti-Corruption Commissio

23m ago