বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের বিক্রি নেই বললেই চলে

বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট
আশা করা হচ্ছে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে ঢাকায় বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি প্রায় নেই বললেই চলে। আসন্ন অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে মানুষ খরচের বিষয়েও সতর্ক।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা বেশি থাকলেও ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তা কমে যায়।

তারা জানান, বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টগুলো বেশিরভাগই কেনেন উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ী বা সরকারি কর্মকর্তারা।

বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস (বিটিআই) লিমিটেডের কমিউনিকেশন অ্যান্ড ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিচালক আয়শা সিদ্দিকা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকার পরিবর্তনের পর যাদের সামর্থ্য আছে তারা খরচ কমিয়ে দিয়েছেন। এটাই স্বাভাবিক।'

'বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের দাম মধ্যবিত্তদের ক্রয়ক্ষমতার অনেক বেশি' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'পরিস্থিতি বদলাতে অনেক সময় লাগবে।'

সবচেয়ে বেশি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি হচ্ছে ঢাকার ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, উত্তরা ও বারিধারার মতো অভিজাত এলাকাগুলোয়।

আয়শা সিদ্দিকার মতে, এসব এলাকায় অ্যাপার্টমেন্টের দাম সাধারণ মানুষের কল্পনারও বাইরে। তবে মাঝারি পরিসরের অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা আগের মতোই আছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখনো প্রতি বর্গমিটারের জন্য ছয় হাজার টাকা কর দেওয়ার সাপেক্ষে স্থাবর সম্পত্তি কেনায় অপ্রদর্শিত আয় ব্যবহারের অনুমতি দেয়।

শান্তা হোল্ডিংস লিমিটেডের হেড অব সেলস অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস শিহাব আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের ক্রেতাদের কালো টাকার মালিক হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। তারা সৎ ব্যবসায়ী।'

তিনি জানান, দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টকে প্রিমিয়াম ও তিন হাজার বর্গফুটের বেশি আয়তনের অ্যাপার্টমেন্টকে বিলাসবহুল হিসেবে ধরা হয়।

তবে বাড়ির অবস্থানের ওপর নির্ভর করে এই শ্রেণিবিন্যাস ভিন্ন হতে পারে।

যেমন বারিধারা, গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডিতে কমপক্ষে আড়াই হাজার বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টগুলোকে বিলাসবহুল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অনন্ত রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশনস রবিউল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, হঠাৎ করে রাজনৈতিক পালাবদল বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।'

কারণ পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হলেও এখনো পুরো স্বাভাবিক নয়। সুতরাং, মানুষ বড় অঙ্কের টাকা খরচের আগে সময় নিচ্ছেন।

'বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের ক্রেতা হিসেবে শীর্ষ নির্বাহী ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রস্তাব দেওয়া হয়' জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের সর্বনিম্ন দাম চার কোটি টাকা থেকে শুরু হয়ে আকার ও জায়গাভেদে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত যেতে পারে।'

'মানুষের খরচ কমে যাওয়ার পাশাপাশি চলমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় ব্যাংকগুলো ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আরও সতর্ক। এটি বিক্রির ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।'

'নতুন অ্যাপার্টমেন্টের ১০ শতাংশ পর্যন্ত প্রিমিয়াম ও বিলাসবহুল হিসেবে আছে কারণ গত কয়েক বছরে এগুলোর চাহিদা বেড়েছে। অনেকে এখন বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে চান। প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি হচ্ছে।'

প্রিমিয়াম ও বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ অগ্রিম পরিশোধ করা বেশ কয়েকজন ক্রেতা রাজনৈতিক কারণে পলাতক। তারা বাকি টাকা দিবেন কিনা তা নিয়ে আশঙ্কায় আছেন রবিউল ইসলাম।

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আকস্মিক পটপরিবর্তনের কারণে সব ধরনের অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি কমে গেছে।'

এমন পরিস্থিতিতে আবাসন ব্যবসায়ীরা কঠিন সময় পার করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে তার আশা আগামী শীতে রিহ্যাব ফেয়ারের আয়োজন করলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

Comments

The Daily Star  | English
gold price rises in Bangladesh

Gold shines through 2025 amid price volatility

If there were a “metal of the year” award, gold would be a strong contender, maintaining an exceptional run even on the final trading day of 2025..Businesspeople said the retail gold market in Bangladesh has remained unstable over the past few months, driven by fluctuating global prices, s

Now