শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বাবা-মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত ফরিদা পারভীন

ফরিদা পারভীন । সংগৃহীত ছবি

কুষ্টিয়ার শহরের পৌর গোরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন 'লালন কন্যা' ফরিদা পারভীন। 

আজ রোববার রাতে এশার নামাজের পর পৌর ঈদগাহে জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরে তার দাফন সম্পন্ন হয়। 

দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তার স্বজনরা মরদেহ নিয়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা হন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মরদেহ ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া পৌঁছায়। 

জানাজায় অংশ নিয়ে ফরিদা পারভীনের ছেলে ইমাম নাহিল সুমন বলেন, 'মা সবসময় কুষ্টিয়ার কথা বলতেন। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার বাবা-মায়ের কবরে দাফন করা হলো।' 

কুষ্টিয়ার শহরের পৌর গোরস্থানে দাফন হয় ফরিদা পারভীনের। ছবি: স্টার

জানাজায় এসেছিলেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, 'ফরিদা পারভীন একটা ধারা তৈরি করে দিয়েছেন। যেই ধারা থেকে আমরা গড়ে উঠেছি।' 

'কুষ্টিয়াকে সত্যিকার অর্থে আমরা সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এটা হবে উপমহাদেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক নগরী। সেই ভিত্তিটা ফরিদা পারভীন তৈরি করে গেছেন,' বলেন তিনি।

১৯৫৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। ১৪ বছর বয়সে তার পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। পারিবারিক সূত্রেই গানের ভুবনে আসা। তার দাদীও গান গাইতেন, পছন্দ করতেন বাবাও।

ফরিদা পারভীন কুষ্টিয়ার মীর মশাররফ হোসেন বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭৪ সালে কুষ্টিয়া গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি ও একই কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন।

নজরুলগীতি, দেশাত্মবোধক নানা ধরনের গান করলেও শিল্পীজীবনে পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন মূলত লালনের গান গেয়ে। ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদক এবং ১৯৯৩ সালে সেরা প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

এছাড়া, ২০০৮ সালে জাপান সরকারের 'ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার' পুরস্কার পান।

দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। ২ সেপ্টেম্বর ডায়ালাইসিসের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। শনিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।


 

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia laid to eternal rest

Buried with state honours beside her husband Ziaur Rahman

9h ago