শাবনাজ-নাঈমের ভালোবাসার পথচলার ৩১ বছর

নব্বই দশকের ঢাকাই সিনেমার দর্শকপ্রিয় জুটি নাঈম ও শাবনাজ। রূপালি পর্দায় তাদের রোমান্টিক রসায়ন যেমন আলো ছড়িয়েছিল, তেমনি বাস্তব জীবনেও তারা ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আজ রোববার এই জুটির বৈবাহিক জীবনের ৩১ বছর পূর্ণ হলো।
১৯৯১ সালে এহতেশাম পরিচালিত 'চাঁদনী' সিনেমার মাধ্যমে প্রথম একসঙ্গে পর্দায় আসেন নাঈম ও শাবনাজ। সেই সিনেমা দিয়েই শুরু হয় তাদের তারকাখ্যাতির যাত্রা এবং ব্যক্তিগত জীবনের এক নতুন অধ্যায়।
'বিষের বাঁশি' সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করার সময় তাদের মধ্যে প্রেম হয়, যা পরিণতি পায় ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর বিয়েতে।
দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক নাঈম বলেন, 'দেখতে দেখতে আমাদের একসঙ্গে পথচলার ৩১ বছর হয়ে গেল। আমরা চাই, এই পথচলা যেন সারাজীবন অব্যাহত থাকে। সবাই আমাদের জন্য ভালোবাসা ও আশীর্বাদ রাখবেন।'
দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন নিয়ে নাঈম বলেন, 'আমরা দুজন দুজনের ওপর নির্ভরশীল। সংসার জীবনে এ নির্ভরশীলতাই সবচেয়ে বড় শক্তি। পাশাপাশি বিশ্বাস, ভালোবাসা আর পারস্পরিক ত্যাগের মানসিকতাও থাকতে হয়। স্যাক্রিফাইস ছাড়া সংসার টেকে না।'
সন্তানদের প্রসঙ্গে নাঈম বলেন, 'জীবন একটাই, কেউ দ্বিতীয়বার জন্ম পায় না। তাই আমরা চাই, আমাদের সন্তানরা যেন ভালো মানুষ হয়—মানবিক হয়। ওদের জন্যই আমাদের সব চাওয়া-পাওয়া।'
দাম্পত্যের মান-অভিমান নিয়ে প্রশ্নে নাঈম হাসতে হাসতে বলেন, 'অবশ্যই মান-অভিমান থাকে, তবে সেটা নিয়েই জীবন চলতে হয়। শুরুতে কিছুটা বেশি হতো, সন্তান হওয়ার পর কমে গেছে। দুটি পরিবার থেকে দুজন নতুন মানুষ একসঙ্গে থাকতে এলে ছোটখাটো সমস্যা হবেই। এগুলো বড় করে না দেখে ভালোভাবে জীবনযাপন করাই বুদ্ধিমানের কাজ।'
'কে কতটা ছাড় দিতে পারে—এটাও সংসার টিকিয়ে রাখার বড় বিষয়। সব পেতে হবে, এটা ভাবা ঠিক নয়। কম প্রত্যাশা করলে জীবনে বেশি পাওয়া যায়,' বলেন তিনি।
অভিনয় জীবন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাঈম বলেন, 'আমরা দুজন মিলে ১৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি। প্রথম ছবিতেই দর্শকরা আমাদের জুটিকে ভালোবাসার সঙ্গে গ্রহণ করেছিলেন।'
বিয়ের সময় পারিবারিক সম্মতি ছিল কি না জানতে চাইলে নাঈম বলেন, 'দুজন দুজনকে পছন্দ করেছিলাম ঠিকই, তবে শেষ পর্যন্ত দুই পরিবারের সম্মতিতেই আমাদের বিয়ে হয়। পরিবার থেকেই প্রস্তাব দেওয়া হয়, এরপর নির্ধারিত হয় বিয়ের তারিখ।'
অভিনয় জীবনের বাইরেও এখন তারা সুখী দাম্পত্য জীবন কাটিয়ে যাচ্ছেন। শাবনাজ বলেন, 'আমরা ভালো আছি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন, যেন আগামীর দিনগুলোও ভালোভাবে কাটে।'
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ভালোবাসা, পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে একসঙ্গে পথচলা শাবনাজ-নাঈমের গল্প আজও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক অনুপ্রেরণার নাম।
Comments