চিত্রনায়ক জসিম স্মরণে রোজিনা

ঢাকাই সিনেমার সোনালি যুগের নায়ক জসিম। ভিলেন হিসেবে পর্দায় আত্মপ্রকাশ করে পরবর্তী সময়ে হয়ে উঠেছিলেন নায়ক। আজ এই কিংবদন্তি চিত্রনায়কের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। চলচ্চিত্রে তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) তার নামে স্থাপন করা হয়েছে 'মুক্তিযোদ্ধা চিত্রনায়ক জসিম ফ্লোর'।
নায়ক জসিমকে স্মরণ করে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপচারিতায় অভিনেত্রী রোজিনা বলেন, 'সিনেমায় তিনি তখনও নায়ক হননি, সেই সময় থেকেই আমাদের পরিচয়। তখন জসিম ভাই সিনেমার ফাইট দৃশ্য পরিচালনা করতেন। আমি মূলত তার ফাইটিং দল জ্যাম্বস গ্রুপের কাছেই মারামারির কৌশল শিখেছি। যেদিন আমার প্রথম মারামারির দৃশ্য ছিল, একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তখন জসিম ভাই আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছিলেন। এরপর একসময় তিনি নিজেই হয়ে উঠলেন বড় পর্দার নায়ক।'
তিনি আরও বলেন, 'নায়ক হিসেবে জসিম ভাই প্রথম অভিনয় করেন 'রাজমহল' সিনেমায়। তিনি
মজার মানুষ ছিলেন, হাস্যরস পছন্দ করতেন। তাকে দেখে বোঝাই যেত না, এত মজা করতে পারেন তিনি। আমরা একসঙ্গে বহু কাজ করেছি। ছিলেন বড় মনের একজন শিল্পী। এই দেশের দর্শকরাও তাকে খুব পছন্দ করতেন।'
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দুই নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন জসিম।
১৯৭২ সালে 'দেবর' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিষেক হয় জসিমের। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে 'রংবাজ', 'দোস্ত দুশমন', 'বারুদ', 'বদলা', 'কসাই', 'দোস্তি', 'প্রতিহিংসা', 'মান-সম্মান', 'তুফান', 'ওমর আকবর', 'স্বামী কেন আসামী', 'সবুজ সাথী', 'লালু মাস্তান', 'অভিযান', 'কালিয়া', 'বাংলার নায়ক' ইত্যাদি।
জসিমের স্ত্রী নাসরিন। তাদের তিন ছেলে রাহুল, রাতুল ও সামী। চলতি বছরের ২৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরার একটি জিমে ব্যায়াম করার সময় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন রাতুল।
চিত্রনায়ক জসিম ১৯৫০ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার নবাবগঞ্জের বক্সনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম আব্দুল খায়ের জসিম উদ্দিন।
Comments