সুবীর নন্দী গানের মধ্য দিয়েই অমর হয়ে থাকবেন: সাবিনা ইয়াসমিন

সুবীর নন্দী (১৯৫৩ – ২০১৯)। ছবি: ফাইল ফটো

শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রাখে সুবীর নন্দীর দরদী কণ্ঠের গান। তিনি সুরের এক অদ্ভুত মায়াজাল ছড়িয়ে তিনি আছেন মানুষের মনের গভীরে। আজ এই শিল্পীর ৬৯তম জন্মদিন।

সুবীর নন্দীর জন্মদিনে তার অনেক গানের সহশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সুবীর নন্দীর কথা আমার মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। তার গান সম্পর্কে নতুন করে আসলে বলার কিছু নেই। তার গানে আলাদা একটা বিষয় রয়েছে। শ্রোতা-দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়। একেবারে অন্যরকম একটা কণ্ঠ। নতুন প্রজন্ম তার গান পছন্দ করে, গাই এটা সত্যি ভালো একটা দিক। তার গানগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। আমরা একসঙ্গে 'ছুটির ঘণ্টা' সিনেমায় 'রহমত ভাই, তোমায় নাম দস্তখত শেখাতে চাই', 'অকৃতজ্ঞ' সিনেমায় 'বুকে মাথা রেখে', 'কুসুমকলি' সিনেমায় 'এ দেহ আমার'-সহ বহু গানে কণ্ঠ দিয়েছি। গানের মধ্য দিয়েই অমর হয়ে থাকবেন তিনি।'

সুবীর নন্দী ১৯৫৩ সালের ৩০ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব কেটেছে চা বাগানে।

সুবীর নন্দীর কণ্ঠে অমর গানগুলোর মধ্যে রয়েছে: 'দিন যায় কথা থাকে', 'আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়', 'পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই', 'আশা ছিল মনে মনে', 'মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই', 'হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে' ও 'বন্ধু তোর বরাত নিয়া'।

এ তালিকায় আরও রয়েছে: 'বন্ধু হতে চেয়ে তোমার', 'কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো', 'পাহাড়ের কাঁন্না দেখে', 'আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি', 'একটা ছিল সোনার কইন্যা' এবং 'ও আমার উড়াল পঙ্খীরে' গানগুলো।

সুবীর নন্দীর সংগীতে হাতেখড়ি মা পুতুল রানীর কাছে। পরে ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন। সিলেট বেতারে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। ১৯৭০ সালে ঢাকা রেডিওতে প্রথম গান করেন 'যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়' শিরোনামের। গানটির কথা রচনা করেন মোহাম্মদ মুজাক্কের এবং সুরারোপ করেন ওস্তাদ মীর কাসেম।

সুবীর নন্দী চলচ্চিত্রে প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে 'সূর্যগ্রহণ' চলচ্চিত্রে। ১৯৮১ সালে তার একক অ্যালবাম 'সুবীর নন্দীর গান' ডিসকো রেকর্ডিং থেকে প্রকাশিত হয়।

সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৯ সালে সুবীর নন্দীকে 'একুশে পদকে' ভূষিত করে। তিনি ৫বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে: মহানায়ক (১৯৮৪), শুভদা (১৯৮৬), শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯), মেঘের পরে মেঘ (২০০৪) ও মহুয়া সুন্দরী (২০১৫)।

বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী ২০১৯ সালের ৭ মে মৃত্যুবরণ করেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

1h ago