‘ত্রাণ নয়, বাঁধ চাই’

কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার গোড়কমন্ডল এলাকায় ধরলা নদীপাড়ে বাঁধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভাঙনকবলিত মানুষেরা। ছবি: এস দিলীপ রায়/ স্টার

নদীপাড়ে সমবেত হয়েছিলেন ভাঙনকবলিত পরিবারের শত শত মানুষ। সবার মুখে একটি স্লোগান, 'হামরাগুলা ইলিপি-টিলিপ চাই না, ভাঙনরোধে বাঁধ চাই। হামাক বাঁধ দিলে হামরাগুলা বাঁচি থাকির পামো।'

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডল এলাকায় ধরলা নদীপাড়ে রোববার বিকেলে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা।

মানববন্ধনে অংশ নেন কৃষক আফতার আলী (৫৬)। তিনি বলেন, পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে সংসার ভালোভাবে যাচ্ছিল। সংসারে কোনো অভাব ছিল না। কিন্তু দুই সপ্তাহ আগে ধরলা নদীর ভাঙনে তার বসতভিটা ও তিন বিঘা আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তারা এখন সরকারি রাস্তার ওপর ঘর তুলে কোনো রকমে জীবনযাপন করছেন। জমি কিনে বসতভিটা তৈরি করার সামর্থ্য নেই তার। ধরলা নদীর ভাঙনে এভাবে ভূমিহীন, বাস্তুহারা হবেন এটা কোনোদিনই ভাবতে পারেননি তিনি।

'এ্যালা হামরা ক্যামন করি বাঁচমো। সোগে তো চলি গ্যাইছে ধরলার প্যাটোত। এ্যালা ক্যাঙ করি সংসার চালাইম,' তিনি বলেন।

'ধরলা নদীর ভাঙন হামাকগুলাক অসহায় করি ফ্যালাইছে।'

মানববন্ধনে মালেকা বেগম (৪৬) কেঁদে কেঁদে বলেন, নদীভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে তিনি তার পরিবারের লোকজনকে সাথে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। 'নদীভাঙনের কারণে হামারগুলার বাড়ি করার এ্যাকনা জাগাও আর থাকিল না। হামরাগুলা এ্যালা প্যাটে চালামো না বাড়ি ভিটার জইন্যে জমি কিনমো,' তিনি বলেন।

গোরকমন্ডল এলাকার ইউপি সদস্য আয়াজ উদ্দিন বলেন, এই গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক বসতভিটা, প্রায় অর্ধ কিলোমিটার রাস্তা এবং তিন শতাধিক বিঘা আবাদি জমি ধরলা নদীতে বিলীন হয়েছে। তিন শতাধিক বসতভিটা, কয়েকশ বিঘা আবাদি জমি,  একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি মাদ্রাসা, চারটি মসজিদ ও একটি সরকারি আবাসন প্রকল্প ভাঙন হুমকিতে আছে। ভাঙন ঠেকাতে জরুরিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে গোড়কমন্ডল এলাকায় ধরলাপাড়ের মানুষ নি:স্ব হয়ে যাবে।

'আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি কিন্তু সদুত্তর পাচ্ছি না,' তিনি বলেন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। বরাদ্দ পেলে ভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English
Gunfight

Local BNP leader shot dead in Dhaka’s Badda

When Kamrul was sitting on a chair on the roadside and talking with 2-3 people, two assailants on foot came from behind and shot him before fleeing the scene

1h ago