আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার না দেওয়ার অভিযোগ বিষয়ে যা বললেন সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান

ঘূর্ণিঝড় মোখা সেন্টমার্টিন দ্বীপে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দ্বীপটিতে কয়েকশ ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, গাছপালা উপড়ে গেছে।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিনের নলকূপ ও পুকুরগুলোতে লোনা পানির প্রভাব না পড়ায় নিরাপদ পানির সংকট হবে না। তবে, সংকট রয়েছে খাবারের।

ঝড়ের প্রভাবে স্থানীয়দের অনেকের বাড়িতে থাকা খাবার নষ্ট হয়েছে। শুকনো খাবারের মজুদও প্রতুল নয়। অভিযোগ রয়েছে, ঘূর্ণিঝড় থেকে নিরাপদ থাকতে দ্বীপের মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হলেও, সেখানে তাদের সবার কাছে খাবার সরবরাহ করা হয়নি। এমনকি আজ সকাল থেকে সেন্টমার্টিন হাসপাতালের আশ্রয়কেন্দ্রে কেউ শুধু এক প্যাকেট বিস্কুট খেয়ে, আবার কেউ এক পিস কেক খেয়ে দিন কাটিয়েছেন। তাও সবাই পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

সেন্টমার্টিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, 'আশ্রয়কেন্দ্রে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা অবস্থান করে সার্বিক বিষয় দেখভাল করছেন। খাবারের সব ব্যবস্থা করা আছে।'

প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থার দাবি করা হলেও সেগুলো বিতরণ না করার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মুজিবর রহমান আজ রোববার রাত সোয়া ৮টার দিকে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'না, খাবার তো দেওয়া হয়েছে। আমরা সবাইকে খাবার ও পানি দিয়েছি।'

তাহলে খাবার না পাওয়ার অভিযোগ কেন আসছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা যত জনকে সম্ভব, তত জনকে খাবার দিয়েছি। যারা আগে থেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন, তাদের সবাই খাবার পেয়েছেন। যারা আমাকে অপছন্দ করেন, আমার বিরোধিতা করেন, তারা বিরোধিতা করার জন্য এসব বলছেন।'

তাকে প্রশ্ন করা হয়, টেকনাফের ইউএনও জানিয়েছেন, আশ্রয়কেন্দ্রে সবাইকে দেওয়ার জন্য খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যানের কাছে। তাহলে আপনার কাছে পর্যাপ্ত খাবার থাকার কথা।

প্রশাসনের কাছ থেকে খাবার পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেননি চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান। তিনি বলেন, 'আমরা সেসব খাবার বিতরণ করেছি।'

গতকাল রাতে যারা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন তারাও খাবার পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মুজিবর রহমান বলেন, 'গতকাল রাতে খাবার দিয়েছি। অর্ধেকের বেশি মানুষকে খাবার দেওয়া হয়েছে। অনেকেই পেয়েছেন। কেউ কেউ হয়তো পাননি।'

ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে কয়েকদিন ধরেই। কিন্তু তারপরও সেন্টমার্টিনে আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের মাঝে প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্য বিতরণ করা হয়নি। রান্না করা খাবার তো দূরের কথা আজ সারা দিনে ঠিক মতো শুকনো খাবারও দেওয়া হলো না কেন? দুপুরে রান্না করার পরিবেশ থাকবে না সেটা অনুমেয় ছিল। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা রাখা হলো না কেন?

এসব প্রশ্নের জবাবে মুজিবর রহমান বলেন, 'দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশের কারণে খাবার রান্না করা যায়নি।'

ঝড় বন্ধ হওয়ার পর আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে নিজ নিজ বাড়ি চলে গেছেন সেন্টমার্টিনের স্থানীয়রা। তবে, অনেকের বাড়িতে থাকা খাবারও নষ্ট হয়ে গেছে, এমনকি শুকনো খাবারের মজুতও অনেকের কাছে নেই। আগামী কয়েকদিনে অনেকের কাজও থাকবে না। সেক্ষেত্রে এই মানুষদের খাবারের ব্যবস্থা কীভাবে হবে জানতে চাইলে মুজিবর রহমান বলেন, 'যাদের দরকার হবে তাদের খাবার দেওয়ার চেষ্টা করব।'.

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

5h ago