যমুনা অয়েলের ফতুল্লা ডিপো: মিলছে না ১ লাখ ১২ হাজার লিটার ডিজেলের হিসাব

যমুনা অয়েল কোম্পানির ফতুল্লা ডিপোতে এক লাখ ১২ হাজার লিটার ডিজেলের হিসেব মিলছে না। এসব ডিজেল সম্প্রতি চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ফতুল্লা ডিপোতে পাঠানো হয়েছিল।
যমুনা অয়েলের কর্মকর্তারা জানান, ফতুল্লা ডিপোর দুটি ট্যাংকের ক্যালিব্রেশনে ভুল থাকায় হিসাবে গরমিল হচ্ছে।
ফতুল্লা ডিপোর ট্যাংক দুটি সিলগালা করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে বিষয়টি তদন্তের জন্য ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম–ঢাকা পাইপলাইন গত ১৬ আগস্ট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর তেল সরবরাহ বন্ধ ছিল। কারণ, উদ্বোধনের আগেই পরীক্ষামূলক জ্বালানি সরবরাহের সময় ঘাটতি দেখা দেয়।
পরে পাইপলাইনের দুই প্রান্তের ফ্লো মিটার সমন্বয় করা হয়।
এরপর পাইপলাইনে ডিজেল সরবরাহ শুরু হয় ১৪ সেপ্টেম্বর। চট্টগ্রামস্থ জ্বালানি তেলের প্রধান টার্মিনাল থেকে ফতুল্লায় যমুনা অয়েলের ডিপোতে পাঠানোর জন্য ১ কোটি ৫ লাখ লিটার ডিজেল পাম্প করা হয়।
২২ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা ডিপোর ২২ ও ২৩ নম্বর ট্যাংকে তেল গ্রহণ করা হয়। ২২ নম্বর ট্যাংকের ধারণক্ষমতা ৬৯ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯ লিটার এবং ২৩ নম্বর ট্যাংকের ধারণক্ষমতা ৫০ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৭ লিটার।
দুটি ট্যাংকে ১ কোটি লিটার তেল পাঠানো হলেও পরবর্তীতে মোট ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৪ লিটার বা ৯৪ দশমিক ৯৫ টন তেল কম পাওয়া গেছে। গরমিল হওয়া ডিজেলের বাজার মূল্য প্রায় এক কোটি ১৪ লাখ টাকা বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
ফতুল্লায় ডিজেলের হিসাব গরমিলের বিষয়টি স্বীকার করে যমুনা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুদরত-ই-ইলাহি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হিসাবের গরমিল হওয়া ট্যাংক দুটির মধ্যে একটি নতুন, আরেকটি পুরনো। যেহেতু সরবরাহকৃত ডিজেলের সঙ্গে রিসিভ হওয়া হিসাবের মিল পাওয়া যাচ্ছে না, তাই ট্যাংক দুটির ক্যালিব্রেশন পুনরায় যাচাই-বাছাই করে হিসাব নির্ধারণের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।'
ইতোমধ্যেই ফতুল্লা ডিপোর ওই দুটি ট্যাংক সিলগালা করে দিয়েছে যমুনা অয়েল কর্তৃপক্ষ।
ট্যাংক দুটির ক্যালিব্রেশনের কোনো সমস্যা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য এজিএম (ইঅ্যান্ডডি) মোহাম্মদ আলমগীর আলমকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—এজিএম (ডিপো অপারেশন্স) শেখ জাহিদ আহমেদ, ম্যানেজার (অপারেশন্স) মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, ম্যানেজার (ডিপো) আসলাম খান আবুল উলায়ী এবং সিপিডিএল ও পিটিসিএলের একজন করে প্রতিনিধি।
যমুনা অয়েল কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, জাহাজে ডিজেল পরিবহনের ক্ষেত্রে গ্ৰহণযোগ্য লস ধরা হয় ০.১৭ শতাংশ। আর পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল সরবরাহ করার ক্ষেত্রে গ্ৰহণযোগ্য লস নির্ধারণ করা হয়েছে ০.০৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং পরিবহন লস কমাতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপো ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন স্থাপন করেছে বিপিসি। এই প্রকল্পে বিপিসি ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কোর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
Comments