কার্যকারিতা হারাচ্ছে নিউমোনিয়ার টিকা

প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশে এখনো সংক্রামক রোগে শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ নিউমোনিয়া। সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে, সেরোটাইপের ধরন পাল্টে যাওয়ায় প্রচলিত টিকা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে পারছে না।

বাংলাদেশে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় ২০১৫ সাল থেকে পিসিভি-১০ টিকা দেওয়া হচ্ছে।

দেশের চারটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা নিতে আসা শিশুদের মধ্যে গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এবং এর বিদ্যমান সেরোটাইপগুলো পাওয়া গেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি সফল সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির পরে বিদ্যমান নিউমোকক্কাল সেরোটাইপের এই পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক ঘটনা।

বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৩৫টি দেশে এখনো পিসিভি-১০ টিকা ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে ১৩০টি দেশ পিসিভি-১৩, ১৬টি দেশ নতুন প্রজন্মের পিসিভি-১৫ ও নয়টি দেশ পিসিভি-২০ টিকা দিতে চালু করেছে।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) যৌথভাবে এই গবেষণা পরিচালনা করে। এতে পৃষ্ঠপোষকতা করে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)।

সম্প্রতি এক গোলটেবিল বৈঠকে নিউমোকক্কাল সারভেইল্যান্স গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন প্রধান গবেষক, আইসিডিডিআরবির সংক্রামক রোগ বিভাগের সহযোগী বিজ্ঞানী ডা. মো. জাকিউল হাসান।

বৈঠকে আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ তার উদ্বোধনী বক্তব্যে নিউমোনিয়া প্রতিরোধে প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর জোর দেন।

গোলটেবিল বৈঠকটি পরিচালনা করেন আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও জাতীয় টিকাদান কারিগরি পরামর্শক দলের (নাইট্যাগ) সভাপতি ড. ফিরদৌসী কাদরী বলেন, 'বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশই তাদের টিকাদান কর্মসূচিতে অধিক কার্যকর নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন অন্তর্ভুক্ত করেছে।'

নতুন প্রজন্মের টিকার দাম পিসিভি-১০ এর থেকে কিছুটা কম বলে জানান ইপিআইয়ের সাবেক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. তাজুল ইসলাম এ বারী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. মো. ফারহাদ হুসাইন বলেন, 'অ্যান্টিবায়োটিকের ওপর নির্ভরতা কমাতে বাংলাদেশকে পিসিভি টিকা হালনাগাদ করতে হবে।'

সংক্রামক রোগের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাব রয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ডা. জাকারিয়া বিন আমজাদ বলেন, 'স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরস্পর গভীরভাবে জড়িত। দৃঢ় বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে টিকাদান কর্মসূচি হালনাগাদ করা শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়, বরং অপরিহার্য।'

গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, প্রচলিত নিউমোকক্কাল সেরোটাইপের বিরুদ্ধে পিসিভি-১৩ টিকা ১৭ শতাংশ, পিসিভি-২০ প্রায় ১৯ শতাংশ ও পিসিভি-২০ প্রায় ৫২ শতাংশ পর্যন্ত বেশি সুরক্ষা দেয়।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia laid to eternal rest

Buried with state honours beside her husband Ziaur Rahman

10h ago