চড়া দামে অস্থির বাজার

চলমান মূল্যস্ফীতিতে চাল, চিনি, ভোজ্যতেলের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এতে স্বল্প ও নির্দিষ্ট আয়ের পরিবারগুলোতে এসব পণ্যের ব্যবহার কমাতে হয়েছে। স্টার ফাইল ছবি

রাস্তার পাশের অস্থায়ী ইফতার বিক্রেতা ইদ্রিস মিয়া কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারে গিয়েছিলেন পেঁয়াজুর জন্য খেসারির ডাল কিনতে।

'বাজারের অন্তত ২০টা দোকানে গেছি খেসারির ডালের খোঁজে। মাত্র দুইটা দোকানে পাইলাম। কিন্তু দাম এত বেশি যে কিনতে পারি নাই,' এই প্রতিবেদককে বলছিলেন ইদ্রিস মিয়া।

তার দাবির সত্যতা যাচাই করতে কারওয়ান বাজারের অন্তত ৩০টি মুদি দোকান ঘুরে দেখি। এর মধ্যে খেসারি ডাল পাওয়া গেছে মাত্র দুটি দোকানে। বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খেসারি ডালের পাইকারি ব্যবসায়ী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বাজারে এই ডাল পাওয়া যাচ্ছে না, তবে আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে সরবরাহ বাড়বে।

কারওয়ান বাজার, কচুক্ষেত, ইব্রাহিমপুর ও মিরপুর-১৪ এর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি, খাসির মাংস, মাছ এবং তরমুজ, কলা, আনারস, পেয়ারা, স্ট্রবেরিসহ বেশ কিছু ফলের দাম ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

দাম বেশি থাকলেও আমদানি করা ফল কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের।

ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০০-২১০ টাকা। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ থেকে ১২০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০০ থেকে ১১৫০ টাকা।

স্বল্প আয়ের মানুষের মাংসের প্রধান উৎস হওয়ায় ব্রয়লার মুরগির চাহিদা বেশি। কিন্তু সরবরাহ পর্যাপ্ত না থাকায় দাম বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী শুক্কুর আলী দাবি করেন, ভালো মানের মাছের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে।

তিনি বলেন, ইলিশ, রূপচাদা, শোল, কোরাল এবং দেশি কইয়ের দাম কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা বেড়েছে। আমাদের কিছু নির্দিষ্ট 'কাস্টমার' আছে যারা দাম যাই হোক না কেন এগুলো কেনে।'

এছাড়া খেজুর, চিনি, মসুর ডাল, আদা, রসুন, আলু, ছোলা ও আটার দাম গত এক মাস ধরেই চড়া।

এদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সোমবার এক নোটিশে ইফতারের অন্যতম প্রধান খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। সাধারণ মানের খেজুরের দাম প্রতি কেজি ১৫০ টাকা থেকে ১৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে রাজধানীর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে ২০০ টাকার নিচে কোনো খেজুর পাওয়া যাচ্ছে না, বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ডেইলি স্টারকে বলেন, তারা সরকার নির্ধারিত দামে খেজুর কিনতে পারছেন না।

ওই দামের মধ্যে খেজুর কিনতে পারলে সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি করবে বলে জানান তারা।

শুধু পেঁয়াজের দাম কমেছে ৫-১৫ টাকা। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫-১০০ টাকায়, যা দুই দিন আগে ৯০-১১০ টাকা ছিল।

এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ইফতার বিক্রির দোকান ঘুরে দেখা যায়, গত বছর ১৫০ থেকে ২২০ টাকা কেজি জিলাপি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়।

ইফতার বিক্রেতাদের দাবি, চিনি, ময়দাসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় জিলাপির দাম বেড়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

15h ago