মানুষের শরীরে শূকরের যকৃৎ প্রতিস্থাপনে চীনা চিকিৎসকদের সাফল্য

চীনের জিয়াংয়ে এয়ার ফোর্স মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে চিকিৎসকরা একজন ব্রেইন ডেড রোগীর যকৃত প্রতিস্থাপন করেন। ছবি শিনহুয়ার সৌজন্য

চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন এক মাইলফলক স্থাপন করেছেন চীনের চিকিৎসকেরা। তারা প্রথমবারের মতো জিনগতভাবে পরিবর্তিত (জেনেটিক্যালি মোডিফাইড) একটি শূকরের যকৃত জীবন্ত মানুষের শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেছেন।

'দ্য জার্নাল অব হেপাটোলজি'-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাতে আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানায় নিউইয়র্ক টাইমস। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ৭১ বছর বয়সী একজন ব্রেইন ডেড ক্যানসার রোগীর শরীরে শূকরের যকৃতের একটি অংশ প্রতিস্থাপন করা হয়। প্রতিস্থাপিত যকৃত ওই রোগীর শরীরে ৩৮ দিন কার্যকর ছিল এবং তার শরীর সেটিকে প্রত্যাখ্যান (রিজেক্ট) করেনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোগীর ক্যানসার আক্রান্ত যকৃতের বড় অংশটি সরিয়ে ফেলে সেই স্থানে শূকরের যকৃত প্রতিস্থাপন করা হয়। শূকরের ওই যকৃত রোগীর শরীরে সফলভাবে পিত্তরস তৈরি, রক্ত জমাট বাঁধার প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে শুরু করে।

এই পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য ছিল রোগীর নিজের যকৃতের অবশিষ্ট অংশ সুস্থ (রিজেনারেট) হওয়ার জন্য সময় দেওয়া। এক্ষেত্রে প্রতিস্থাপিত শূকরের যকৃৎটি সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। তবে ৩৮ দিন পর জটিলতা দেখা দিলে সেটিকে অপসারণ করা হয়। আগে থেকেই গুরুতর অসুস্থ ওই রোগী এর সাড়ে পাঁচ মাস পর মারা যান।

এই ঘটনাকে 'যুগান্তকারী সাফল্য' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এর আগে বানরের দেহে শূকরের যকৃৎ প্রতিস্থাপন করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা ব্যর্থ হয়েছিলেন। এই সাফল্য প্রমাণ করে যে, শূকরের অঙ্গকে মানুষের শরীরের সহায়ক অঙ্গ হিসেবে সাময়িকভাবে হলেও ব্যবহার করা সম্ভব।

যকৃত প্রতিস্থাপনে জড়িত চীনের প্রধান গবেষক ডা. বেইচেং সান বলেন, 'আমার লক্ষ্য ছিল প্রতিস্থাপিত যকৃত রোগীকে সেরে উঠতে সহায়তা করবে। যতক্ষণ না রোগীর নিজের যকৃৎ সেরে ওঠে বা কোনো অঙ্গদাতা পাওয়া যায় ততক্ষণ শুকরের যকৃত কাজে লাগানো যেতে পারে।'

চীনে প্রতিবছর কয়েক লাখ মানুষ যকৃতের গুরুতর রোগে আক্রান্ত হন। দেশটিতে অঙ্গদাতার সংকটও তীব্র। বিজ্ঞানীদের আশা এই গবেষণাটি ভবিষ্যতে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Airport fire exposes costly state negligence

The blaze that gutted the uninsured cargo complex of Dhaka airport on Saturday has laid bare a deep and dangerous negligence in risk management across government installations.

5h ago