নিউইয়র্ক পুলিশের সতর্কতা: ট্রাম্প কি গ্রেপ্তার হচ্ছেন

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য গ্রেপ্তার ঘিরে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

গতকাল সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পের সম্ভাব্য গ্রেপ্তারকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটন জেলা আদালতের চারপাশে ব্যারিকেড বসিয়েছে।

কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম ফৌজদারি মামলা হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প তার সমর্থকদের এর প্রতিবাদ করার আহ্বান জানানোয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বাড়তি সতর্কতা নিতে হচ্ছে।

এতে বলা হয়, নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস গণমাধ্যমকে বলেছেন, পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো পর্যবেক্ষণ করছে। শহরে কোনো 'অনাকাঙ্ক্ষিত' ঘটনা ঘটে কিনা সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। নিউইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকিতে পড়তে পারে এমন কোনো লক্ষণ আপাতত নেই।

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ম্যানহাটন ফৌজদারি আদালতের বাইরে ব্যারিকেড বসাচ্ছে নিউইয়র্ক পুলিশ। ২০ মার্চ ২০২৩। ছবি: রয়টার্স

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি উগ্র সমর্থক গোষ্ঠী 'ফাঁদে' পড়ার আশঙ্কায় ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণার সময় এক পর্ন তারকার মুখ বন্ধ করতে তাকে অর্থ দেওয়ার অভিযোগের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গত শনিবার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে দাবি করেন ট্রাম্প। সেসময় তিনি তার সমর্থকদের এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আহ্বানও জানান।

এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে যায় এবং রাজনৈতিক মহল বিষয়টি নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠে।

ট্রাম্পের আইনজীবীদের বরাত দিয়ে আজ মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, যদি সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠিত হয় তাহলে নিয়ম মেনেই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

অর্থাৎ, ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো বাসভবন থেকে ট্রাম্পকে নিউইয়র্ক শহরের আদালতে আনা হবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ম্যানহাটন আদালতের সামনে ট্রাম্প সমর্থকদের বিক্ষোভ। ২০ মার্চ ২০২৩। ছবি: রয়টার্স

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ধরনের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের সুযোগ আছে। তবে তাকে কোন পথে নিউইয়র্ক আনা হবে তা প্রকাশ করা হয়নি। এ নিয়ে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে আদালতের কর্মকর্তারা আলোচনা করবেন।

তবে শুনানির তারিখ ও জামিনের সুযোগসহ বেশকিছু বিষয় এর সঙ্গে জড়িত।

ট্রাম্পের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে কীভাবে আদালতে হাজির করানো হবে সেটিও নির্ভর করবে আদালতে তার আবেদনের ওপর।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প যদি অভিযুক্ত হন তাহলে তার সর্বোচ্চ ৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে আইনজ্ঞরা বলছেন, সাবেক প্রেসিডেন্টের জরিমানা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তার কারাদণ্ডের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে যে, সিক্রেট সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য শাখা যারা দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্টদের নিরাপত্তা দেয় তারা ট্রাম্পের সম্ভাব্য গ্রেপ্তার নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে গতকাল সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে, ৭৬ বছর বয়সী ট্রাম্পকে হাতকড়া পরা অবস্থায় দেখা নাও যেতে পারে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ট্রাম্পের অনুসারী রিপাবলিকানরা এই মামলার সমালোচনা করে বলছেন এটি 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত'।

এমনকি, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অর্থ দেওয়ায় দোষের কিছু দেখছেন না।

গণমাধ্যমকে বলেছেন, 'আমি বুঝি না মুখ বন্ধ রাখতে যদি অর্থ দেওয়া হয় তাহলে সমস্যা কোথায়?'

গত শনিবার টাইম ম্যাগাজিন জানায়, ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগ সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গ্রেপ্তার হওয়ার দাবি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ট্রাম্পের এক মুখপাত্র বলেছেন যে, এখনো পর্যন্ত কোনো পরোয়ানা হাতে আসেনি।

Comments

The Daily Star  | English

‘This fire wasn’t an accident’: Small business owner’s big dreams destroyed

Once a garment worker, now an entrepreneur, Beauty had an export order ready

5h ago