ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধের শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা নয়: ইরান

তেহরানের ব্যস্ত সড়কে বিলবোর্ডে খামেনির ছবি। ছবি: এএফপি
তেহরানের ব্যস্ত সড়কে বিলবোর্ডে খামেনির ছবি। ছবি: এএফপি

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম থেকে সরে আসার শর্ত দিলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নতুন করে পরমাণু আলোচনায় যেতে আগ্রহী নয় তেহরান।

আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ওয়াশিংটন ও তেহরান বেশ কয়েক দফা আলোচনা ও দরকষাকষিতে অংশ নেয়। কিন্তু এই উদ্যোগে বাদ সাধে ইসরায়েল।

আঞ্চলিক 'শত্রুর' বিরুদ্ধে আকস্মিক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মাধ্যমে পাল্টা জবাব দেয় ইরান। দুই দেশের সংঘাত ১২ দিন স্থায়ী হয়।

সহিংসতার অবসান ঘটার পর ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই আলোচনার টেবিলে ফেরর ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে তেহরান দৃঢ়ভাবে জানিয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের অধিকার থেকে সরে আসবে না।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি বেলায়েতির বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনা  জানিয়েছে, '(ইউরেনিয়াম) সমৃদ্ধকরণ বন্ধের শর্তে কোনো আলোচনা হবে না।''

এর আগে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকি জানান, ইরান এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে বৈঠকে বসার দিন চূড়ান্ত করেনি।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এখন পর্যন্ত ওই বৈঠক কবে, কোথায় এবং কখন হবে, তা নির্ধারণ হয়নি।'

মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে বৈঠক করছেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে বৈঠক করছেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

এপ্রিলে শুরু হওয়ার পর পাঁচ দফা বৈঠক করেও একমত হতে পারেননি উইটকফ ও আরাকচি।

২০১৮ সালে সর্বশেষ পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে আসার পর এটাই ওয়াশিংটন-তেহরানের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রথম বৈঠক। ওমানের মধ্যস্থতায় এই বৈঠকগুলো আয়োজিত হয়।

১৩ জুন ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার পর পূর্বনির্ধারিত ষষ্ঠ দফার বৈঠকটি বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীতে সীমিত আকারে ইসরায়েলের সঙ্গে হামলায় যোগ দেয় তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।

বাকি বলেন, 'আমরা কূটনীতি ও দরকষাকষিকে বিশেষ গুরুত্ব দেই। আমরা খোলা মনে আলোচনায় যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু আপনারা সবাই দেখেছেন, ষষ্ঠ দফার আলোচনার আগে (ইসরায়েলের) জায়নবাদি শাসক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসন পরিচালনা করে।'

ব্রিকস সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ব্রিকস সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। ফাইল ছবি: রয়টার্স

সোমবার এক বিবৃতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ইরান সব সময় 'কূটনীতি ও গঠনমূলক আলোচনাকে সমর্থন করে'।

'আমরা বিশ্বাস করি, এখনো কূটনীতির পথ খোলা আছে এবং আমরা গুরুত্ব নিয়েই শান্তিপূর্ণ পথে হাঁটব'।

ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ এনেছে। কিন্তু ইরান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।

পরমাণু অস্ত্রের মালিক না হয়েও একমাত্র দেশ হিসেবে তেজস্ক্রিয় উপকরণ ইউরেনিয়ামের ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধকরণ করতে সক্ষম হয়েছে ইরান। তবে পরমাণু অস্ত্র নির্মাণ করতে আরও বেশ খানিকটা সমৃদ্ধকরণ করা প্রয়োজন।

অপরদিকে, জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইইএই জানিয়েছে, ইরান তার ইউরেনিয়ামের মজুদকে পরমাণু অস্ত্র নির্মাণে ব্যবহার করছে বা করতে চায়, এমন কোনো আভাস তারা পাননি।

Comments

The Daily Star  | English

Fugitives can’t run in national elections

The Election Commission has proposed stricter amendments to the election law, including a provision barring fugitives from contesting national polls.

9h ago