'৬ মিনিটের বিপর্যয়'

ক্রেন দিয়ে উড়োজাহাজ থেকে ধ্বংস্তুপ পরিষ্কারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
ক্রেন দিয়ে উড়োজাহাজ থেকে ধ্বংস্তুপ পরিষ্কারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ কোরিয়ার উড্ডয়ন খাতের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি মাত্র ছয় মিনিটের মধ্যে ঘটে যায়। দেশটির ভূমি, অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয় এই ছয় মিনিটের এই ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছে।

আজ রোববার সিঙ্গাপুর ভিত্তিক গণমাধ্যম স্ট্রেইটস টাইমস এই তথ্য জানিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান বিমানবন্দরে ১৮১ জন আরোহী নিয়ে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় দুইজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট বেঁচে ফিরেছেন। বাকি সব যাত্রী নিহত হয়েছেন। 

১৭৫ জন যাত্রী ও ছয়জন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট নিয়ে জেজু এয়ারের উড়োজাহাজটি থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ছয় মিনিটের বিপর্যয়

প্রাচীরে আটকে আছে উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: রয়টার্স
প্রাচীরে আটকে আছে উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: রয়টার্স

আজ রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা বেজে ৫৭ মিনিটে মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার জেজু এয়ারের ফ্লাইট ২২১৬কে পাখির সঙ্গে ধাক্কার বিষয়ে হুশিয়ারি দেয়।

এক মিনিট পর উড়োজাহাজের পাইলটরা 'বিপদে পড়ার' মে ডে কল দেয়। কয়েকটি গণমাধ্যম বলেছে, পাখির সঙ্গে ধাক্কা লেগে ল্যান্ডিং গিয়ার অকেজো হয়ে পড়ে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় চাকা না খুলেই অবতরণ করেছে উড়োজাহাজটি।

বিপদ সংকেত দেওয়ার দুই মিনিটের মাথায়, সকাল ৯টার সময়য় উড়োজাহাজটি এয়ারপোর্ট কন্ট্রোলের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে রানওয়ের বিপরীত দিকে অবতরণের উদ্যোগ নেয়।

তিন মিনিটের মাথায়, ঠিক ৯টা বেজে ৩ মিনিটে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয় এবং এতে আগুন ধরে যায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে, উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং এর এই উড়োজাহাজটিতে যে দুইজন পাইলট ছিলেন, তারা যৌথভাবে আট হাজার ৪৭৩ ঘণ্টা আকাশযান চালানোর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন।

উড়োজাহাজের ফ্লাইট রেকর্ডার উদ্ধার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এখনো ভয়েস রেকর্ডার খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্তে এগুলো ব্যবহার করা হয়।

ছোট রানওয়ের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেনি, দাবি কর্তৃপক্ষের

স্বজন হারানোর বেদনায় কাঁদছেন এক নারী। ছবি: রয়টার্স
স্বজন হারানোর বেদনায় কাঁদছেন এক নারী। ছবি: রয়টার্স

উড্ডয়ন নীতি পরিচালক জু জং-ওয়ান জানিয়েছেন, মুয়ান বিমানবন্দরের 'ছোট রানওয়ের' কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, এমন দাবি ভিত্তিহীন।

তিনি বলেন, 'মুয়ান বিমানবন্দরের রানওয়ে দুই হাজার ৮০০ মিটার দীর্ঘ। একই উড়োজাহাজ আগেও সেখানে অবতরণ করেছে।'

তিনি জানান, ইনচেওন বা গিমপো বিমানবন্দরের চেয়ে মুয়ানের রানওয়ে ছোট হলেও তা চেংজু ও দায়েগু বিমানবন্দরের চেয়ে বড়।

এর আগে বৈরি আবহাওয়া ও পাখির সঙ্গে ধাক্কা খাওয়াকে দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ বলে উল্লেখ করে তারা।

উড়োজাহাজ 'পুরোপুরি ধ্বংস'

দক্ষিণ কোরিয়ায় বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে তখনো জ্বলছিল আগুন। ছবি: এএফপি
দক্ষিণ কোরিয়ায় বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে তখনো জ্বলছিল আগুন। ছবি: এএফপি

দমকল বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, 'উড়োজাহাজটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে বলা যায়'। মরদেহ উদ্ধার কার্যক্রমের গতি কমে এসেছে বলেও তিনি জানান।

মুয়ানের ফায়ার সার্ভিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'উড়োজাহাজের বেশিরভাগ অংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে এবং নিহতদের পরিচয় জানা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের মরদেহ চিহ্নিত করে উদ্ধার করছি। এতে অনেক সময় লাগছে।'

'দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পর আরোহীরা উড়োজাহাজ থেকে ছিটকে বাইরে পড়ে যান। যার ফলে কারও জীবিত থাকার সম্ভাবনা খুবই কম', বলেন তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Hopes run high as DU goes to vote today

The much-anticipated Ducsu and hall union elections are set to be held today after a six-year pause, bringing renewed hope for campus democracy.

5h ago