কাতারে হামলার জেরে দুবাই এয়ারশোতে নিষিদ্ধ ইসরায়েল

চলতি বছরের নভেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানীতে আয়োজিত হতে যাচ্ছে 'দুবাই এয়ারশো'। ওই সম্মেলনে উড্ডয়ন খাতসংশ্লিষ্ট ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়ে থাকে। তবে এবারের আসরে ঠাঁই পাবে না কোনো ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান।
আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম ওয়াইনেট ও মিডল ইস্ট মনিটর।
চলতি বছরের ১৭ থেকে ২১ নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য ওই সম্মেলনে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা খাত সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করেছে আমিরাত।
বিশ্লেষকদের মতে, দোহায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ওপর হামলার সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমিরাত কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বুধবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উল্লেখিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে আরব আমিরাত।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে 'নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের' কারণে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দুবাই।
তবে ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, কাতারের হামাস নেতাদের ওপর হামলার জেরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কাতারের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ক্রান্তিলগ্নে দেশটির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে গত বুধবার আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ বিন জায়েদ দোহা সফর করেন।
জর্ডানের রাজপুত্র হুসেইন ও সৌদি আরবের রাজপুত্র মোহাম্মদ বিন সালমানও শিগগির দোহায় যাবেন বলে জানা গেছে।
দুবাই এয়ারশো বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা খাতের একটি উল্লেখযোগ্য বার্ষিক সম্মেলন। প্রতি বছরই এই সম্মেলনকে ঘিরে অনেক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়।
চলতি বছরের নভেম্বরের ওই সম্মেলনে ৯৮টি দেশও থেকে এক হাজার ৪০০'র ও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। সেখানে ১৯২টি উড়োজাহাজ প্রদর্শন করা হবে। এতে যোগ দেবেন মোট এক লাখ ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ।
দীর্ঘ সময় ধরে এই সম্মেলনে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিয়ে আসছে।
১৯৮৯ সালে প্রথমবারের মতো এই সম্মেলনে ও প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। সেবার এতে ২০০ প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় এবং ২৫টি উড়োজাহাজ প্রদর্শন করা হয়।
অপরদিকে, চলতি সপ্তাহে পোল্যান্ডে একটি অস্ত্র প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার সময় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা খাতের কর্মীদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে স্থানীয় পুলিশ। তাদেরকে সামরিক বাহিনীর কার্যক্রম ও রিজার্ভ সেনা হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়।

এর আগে, দোহায় ইসরায়েলের হামলার পর অন্যান্য দেশের পাশাপাশি আমিরাতও এর নিন্দা জানায়। তারা ওই হামলাকে 'বিশ্বাসঘাতকতামূলক' ও 'কাপুরুষতার পরিচয়' হিসেবে আখ্যা দেয়। আমিরাতের মতে, ইসরায়েলের এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও কাতারের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।
আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ জানান, 'সংযুক্ত আরব আমিরাত কাতারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের সব ধরনের উদ্যোগে সমর্থন জানাচ্ছে।'
Comments