সুদানে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিয়েছে আরএসএফ
অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র ও বন্ধুভাবাপন্ন আরব দেশগুলোর পরামর্শ মেনে মানবিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে সুদানের আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)।
গত বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতিতে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তারা।
গত দুই বছর ধরে সুদানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়ে আছে আরএসএফ। এর আগেও একাধিক যুদ্ধবিরতিতে তারা রাজি হয়েছে। তবে কোনোটাই শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়নি।
নতুন বিবৃতিতে আরএসএফ জানায়, 'সুদানের সাধারণ মানুষের স্বার্থে কোয়াড দেশগুলোর প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তি মানবে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস।'
যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব এই অনানুষ্ঠানিক সুদানে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত 'কোয়াড মধ্যস্থতাকারী সংস্থার' সদস্য। এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার 'কোয়াড নিরাপত্তা জোটের' কোনো সম্পর্ক নেই।
এর আগে দারফুরের পশ্চিমে দুর্ভিক্ষপীড়িত এল-ফাশের শহরের নিয়ন্ত্রণ আধা-সামরিক বাহিনীর হাতে চলে যায়। তার দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই বিবৃতি প্রকাশ করে তারা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আফ্রিকা উপদেষ্টা মাসাদ বুলোস এই সপ্তাহের শুরুর দিকে জানান, আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস ও সামরিক বাহিনী উভয়ই তিন মাসের শান্তিচুক্তিতে রাজি হয়েছে।
আরএসএফ বিবৃতিতে দিয়ে এই চুক্তি মানলেও সামরিক বাহিনী এখনো এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। এর আগে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান বলেন, তার সেনারা 'প্রতিপক্ষের পরাজয়ের' জন্য অপেক্ষা করছে।
মানবিকতার সংকট
এল-ফাশেরে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে দারফুরের অধিকাংশ এলাকার দখল নিয়েছে আরএসএফ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অভিযোগ করেছে, স্থানীয় হাসপাতালে হামলা চালিয়ে প্রায় ৪৫০ মানুষকে মেরেছে আরএসএফ। এছাড়াও বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষদের মারা হয়েছে এবং যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত একটি রিপোর্টে স্যাটেলাইট ছবিতে গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর থেকে ওই অঞ্চলে অত্যাচারের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। একাধিক মানবাধিকার সংগঠন সুদানে সাধারণ মানুষের উপর ঘটে চলা অত্যাচার নিয়ে সরব হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ওই অঞ্চলে কাজ করা অলাভজনক সংগঠন ইসলামিক রিলিফ জানিয়েছে, তাদের স্থানীয় লঙ্গরখানাগুলো প্রায় বন্ধ হতে বসেছে।
এসব দাতব্য সংগঠনের মাধ্যমে সুদানের বহু পরিবারের খাবারের সংস্থান হয়।
সুদানে কর্মরত ডাক্তারদের নেটওয়ারর তাউইলা, কুর্মা ও গোলো অঞ্চলের আশ্রয়শিবিরগুলোর করুণ দশা তুলে ধরেছে।
এসব অঞ্চলে প্রচুর বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিতে আসছেন বলে জানিয়েছে তারা। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ৩৬ হাজারেরও বেশি মানুষ দেশের অন্যান্য অংশ থেকে সেখানে পালিয়ে এসেছেন।
এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ


Comments