প্রয়াত একনায়ক সুহার্তোকে ‘জাতীয় বীরের’ ঘোষণা দিলো ইন্দোনেশিয়া

১৯৯২ সালে তৎকালীন ইন্দোনেশীয় প্রেসিডেন্ট সুহার্তো জাতিসংঘে বক্তব্য রাখছেন। ছবি: এএফপি
১৯৯২ সালে তৎকালীন ইন্দোনেশীয় প্রেসিডেন্ট সুহার্তো জাতিসংঘে বক্তব্য রাখছেন। ছবি: এএফপি

জাতীয় বীরের নতুন তালিকায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ও একনায়ক সুহার্তোকে যুক্ত করেছে ইন্দোনেশিয়া।

আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

প্রয়াত একনায়ক সুহার্তোর বিরুদ্ধে অসংখ্যবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে। তাকে 'বীরের মর্যাদা' দেওয়ার বিষয়ে প্রবল আপত্তি তোলেন মানবাধিকারকর্মী ও বুদ্ধিজীবীরা। কিন্তু সে আপত্তি ধোপে টেকেনি।

নতুন করে সুহার্তোসহ ১০ ব্যক্তিকে এই মর্যাদা দেওয়া হয়। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্টের সামরিক সচিব এই তালিকা পড়ে শোনান।

ইতোমধ্যে তালিকা ২০০ জনেরও বেশি ইন্দোনেশীয় আছেন। তালিকার অন্য বীরদের মধ্যে আছেন দেশটির প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট, নারী অধিকারকর্মী, আলেম-ওলামা ও নিরপেক্ষ মানবাধিকারকর্মীরা।

সুহার্তোকে জাতীয় বীর আখ্যা দেওয়া প্রতিবাদ। ছবি: রয়টার্স
সুহার্তোকে জাতীয় বীর আখ্যা দেওয়া প্রতিবাদ। ছবি: রয়টার্স

সুহার্তোর সাবেক জামাতা ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো আজ সোমবার জাতীয় বীর দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

সুহার্তোকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সমালোচনার জবাবে সুবিয়ান্তো'র কার্যালয় থেকে বলা হয়, 'প্রেসিডেন্টের যাকে ইচ্ছা তাকে এই তকমা দেওয়ার অধিকার আছে।'

২০০৮ সালে ৮৬ বছর বয়সে মারা যান সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তো। ১৯৬৭ সালে একটি ব্যর্থ ক্যুর পর ক্ষমতায় আসেন তিনি। টানা ৩০ বছরেরও বেশি সময় ইস্পাত কঠিন হাতে দেশ শাসন করেন তিনি ।

ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের সহিংসতার মাধ্যমে দমন-পীড়নের অভিযোগ আসে।

গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার ৫০০ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি প্রাবোয়োকে একটি চিঠি পাঠিয়ে এই উদ্যোগ বন্ধের অনুরোধ জানান।

চিঠিতে বলা হয়, সুহার্তোকে এই খেতাব দেওয়া এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা। এটি ইতিহাস বিকৃতির এক বিপজ্জনক নজির হতে চলেছে।

স্বৈরশাসক সুহার্তোর ছেলে-মেয়ে। ছবি: রয়টার্স
স্বৈরশাসক সুহার্তোর ছেলে-মেয়ে। ছবি: রয়টার্স

সুহার্তোর এই সম্মাননার প্রতি সমর্থন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাসেত্য হাদি বলেন, 'এভাবে আমরা আমাদের পূর্বসূরিদের সম্মান জানাই। বিশেষত, সাবেক নেতাদের, যারা নিঃসন্দেহে এই দেশ ও জাতির কল্যাণে অসামান্য অবদান রেখেছেন।'

সোমবারের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সুহার্তোর মেয়ে সিতি হারদিয়ান্তি রুকমানা ও ছেলে বামবাং ত্রিহাতমোজো।

অনুষ্ঠানের পর সিটি গণমাধ্যমকে বলেন, 'তরুণ বয়স থেকে বার্ধক্যে পৌঁছানো পর্যন্ত আমার বাবা যা যা করেছেন, সেগুলো স্মরণ করুন। তার সব সংগ্রাম দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত।'

Comments

The Daily Star  | English

A DARK DAY FOR INDEPENDENT JOURNALISM

They can burn our office, not our resolve

37m ago