বিবিসির ক্ষমা চাওয়ায় ‘তুষ্ট’ নন ট্রাম্প, চাইবেন ৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ
তথ্যচিত্র সম্পাদনার অভিযোগে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) বিরুদ্ধে আগামী সপ্তাহে ৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করে মানহানি মামলা করতে পারেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ট্রাম্প।
এর আগে বৃহস্পতিবার তথ্যচিত্রটি 'সম্পাদনায় ভুল হয়েছে' স্বীকার করে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায় বিবিসি।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন এর সূত্রে জানা যায়, ট্রাম্প বলেন, 'আমরা তাদের বিরুদ্ধে এক বিলিয়ন থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে মামলা করব, সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই। আমার মনে হয়, এটা আমাকে করতেই হবে। তারা এমনকি স্বীকারও করেছে যে তারা প্রতারণা করেছে।'
বিবিসি অবশ্য জোর দিয়ে বলছে, ট্রাম্প ও তার আইনজীবীদের দাবির পক্ষে কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা সোমবার বিবিসিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন, যেখানে অভিযোগ করা হয় যে বিবিসি ২০২১ সালের মার্কিন ক্যাপিটল দাঙ্গার আগে দেয়া তার বক্তৃতার ভিডিওতে 'মানহানিকর সম্পাদনা' করেছে।
চিঠিতে বিবিসিকে শুক্রবার পর্যন্ত ক্ষমা চাওয়া এবং অপরিমেয় সুনামহানি ও আর্থিক ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়ার সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়।
এই বিষয়টি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান ট্রাম্প। বলেন, 'আমি তাকে সপ্তাহান্তে ফোন করব। আসলে তিনিই আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি খুব বিব্রত।'
গত বছরের অক্টোবরে প্রচারিত বিবিসির 'প্যানোরামা' তথ্যচিত্রে ট্রাম্পের ২০০১ সালের ৬ জানুয়ারির বক্তৃতার তিনটি ভিন্ন অংশ জোড়া লাগানো হয়। ট্রাম্পের আইনজীবীরা বলছেন, এই সম্পাদনা এমন ধারণা তৈরি করেছে যে, তিনি ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গা উসকে দিচ্ছেন। বিষয়টি একেবারেই 'মিথ্যা ও মানহানিকর'।
জিবি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, সম্পাদনাটি 'অবিশ্বাস্য'। এই বিষয়টিকে তিনি নির্বাচনী হস্তক্ষেপের সঙ্গেও তুলনা করেন।
ট্রাম্প বলেন, 'আমি একটি সুন্দর ভাষণ দিয়েছিলাম, আর তারা সেটিকে সুন্দর না-থাকা ভাষণ বানিয়ে ফেলেছে। ফেইক নিউজ একটা দারুণ শব্দ ছিল, কিন্তু এটাও যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। এটি ভুয়া সংবাদ নয়— এটি দুর্নীতিগ্রস্ত।'
বিবিসি চেয়ার সামির শাহ হোয়াইট হাউসের কাছে ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ব্রিটিশ আইনপ্রণেতাদের জানান যে এই সম্পাদনা ছিল 'এরর অব জাজমেন্ট'।
ব্রিটিশ সংস্কৃতি মন্ত্রী লিসা ন্যান্ডি শুক্রবার বলেন, বিবিসির এই ক্ষমা চাওয়া ছিল 'যথাযথ ও প্রয়োজনীয়'।
তবে বিবিসির ক্ষমা প্রার্থনাকে অপর্যাপ্ত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের ভাষণ সম্পাদনা নিয়ে সৃষ্ট এই সমালোচনার ফলে বড় ধরনের সংকটে পড়েছে বিবিসি নিউজ। গত রোববার প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং বার্তাবিভাগের প্রধান (হেড অব নিউজ) ডেবোরা টারনেস পদত্যাগ করেন।


Comments