শ্যাম্পু নাকি কো-ওয়াশ

কো-ওয়াশ নতুন একটি পদ্ধতি হলেও চুল বিশেষজ্ঞরা তাদের অনেক ক্লায়েন্টকে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চুল ধোয়ার পরামর্শ দেন। ছবি: সংগৃহীত

আমাদের দেশে অনেকেই এখনও কো-ওয়াশের সঙ্গে পরিচিত নন। এটি মূলত কন্ডিশনারের সাহায্যে চুল ধোয়ার একটি নতুন ও অভিনব পদ্ধতি। তবে কাদের জন্য বা কীভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে সেই বিষয়ে ভালো ধারণা নেই অনেকেরই।

যেমন অনেকে ভাবেন কো-ওয়াশ মূলত শ্যাম্পু করা বাদ দিয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করা। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। মূলত এই পদ্ধতিতে কন্ডিশনার ব্যবহার করেই চুল ধুয়ে ফেলতে হয়। স্ক্যাল্পেও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হয়। এতে করে শ্যাম্পু করার ফলে চুলে যে অতিরিক্ত রুক্ষতা চলে আসে সেটি থেকে চুল মুক্তি পায়।

কো-ওয়াশ নতুন একটি পদ্ধতি হলেও চুল বিশেষজ্ঞরা তাদের অনেক ক্লায়েন্টকে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চুল ধোয়ার পরামর্শ দেন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সন্তুষ্ট হওয়া লোকজনের সংখ্যাও কম নয়। তাই আজকে এই পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছি।

কাদের জন্য কো-ওয়াশ

মূলত যাদের চুল অনেক বেশি রুক্ষ ও শুষ্ক তাদের জন্যই এই পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি কার্যকর হবে। কন্ডিশনারের মধ্যে কিছুটা ক্লিঞ্জিং উপাদান থাকে বলে এটি স্ক্যাল্পসহ চুলে ব্যবহার করলে চুল ঠিকই পরিষ্কার হয়। সেইসঙ্গে শ্যাম্পুর ফলে চুলে যে রুক্ষ ভাব দেখা দেয় সেটি হয় না। কোঁকড়া চুলের জন্য এই পদ্ধতিতে চুল ধোয়া বেশ কার্যকরী হতে পারে।

তবে যাদের স্ক্যাল্প খুব বেশি ওয়েলি তাদের এই পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে করে স্ক্যাল্পে তেলের আধিক্য হতে পারে। তবে অত সমস্যা না হলে সপ্তাহে একবার করা যেতে পারে।

কীভাবে করবেন কো-ওয়াশ

শ্যাম্পুর বদলে কন্ডিশনারের সাহায্যে পুরো স্ক্যাল্প থেকে চুল পর্যন্ত ম্যাসাজ করতে হবে। কন্ডিশনারে সামান্য কিছু উপাদান পাওয়া যায় যেগুলো চুল ধোয়ার কাজ করে। তাই বেশ কিছু সময় ম্যাসাজ করার পরে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর আবার চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।

তবে যদি চুল ধোয়ার পর ময়েশ্চারের পরিমাণ যথেষ্ট মনে হয়, তাহলে কন্ডিশনার বাদ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু চুলে সিরাম ব্যবহার করতে হবে।

কতবার কো-ওয়াশ করবেন

কোঁকড়া ও রুক্ষ শুষ্ক চুল যত কম ধোয়া যায় ততই ভালো। বিশেষজ্ঞরা ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে একবার চুল ধোয়ার পরামর্শ দেন, যদি অতিরিক্ত ধুলাময়লা চুলে না লাগে। তবে শহুরে জীবনে এটি পালন করা বেশ কষ্টসাধ্য। তাই ৩-৪ দিন পরপর চাইলে চুল কো-ওয়াশ করতে পারবেন।

কী রকম কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে

সালফেট নেই এমন যে কোনো কন্ডিশনার ব্যবহার করে কো-ওয়াশ করা সম্ভব। সালফেট চুলের মধ্যে অতিরিক্ত একটি প্রলেপ দেয় এতে করে চুল ধোয়ার মতো কিছু থাকে না। তাই সালফেট ফ্রি কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে এই পদ্ধতিতে।

বিশেষ কিছু দিক-

•     কন্ডিশনার চুলে দিলে অনেকেই ভাবেন চুল পড়ে যায়। আসলে কন্ডিশনারের সঙ্গে চুল পড়ার সম্পর্ক নেই। তবে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায় কন্ডিশনার দিলে। এজন্য রুক্ষ চুলের জন্য এই কো-ওয়াশ পদ্ধতি ব্যবহার করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

•        চুলে যদি তেল থাকে তাহলে কন্ডিশনারের সাহায্যে সেটি পুরোপুরিভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। তাই তেল বা এ জাতীয় কোনো পণ্য ব্যবহার করলে চুল ধোয়ার জন্য অবশ্যই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

•       অতিরিক্ত ঘাম হলে চুলে এই পদ্ধতি ব্যবহার করবেন না। কারণ অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে চুলের মধ্যে তেল উৎপন্ন হতে পারে। সেগুলো পরিষ্কার করা জন্য কন্ডিশনার যথেষ্ট নয়।

•       এই পদ্ধতি ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চুলের ও স্ক্যাল্পের ধরন পরীক্ষা করে নিন। কারণ এই পদ্ধতি সব ধরনের চুলের জন্য প্রযোজ্য না।

•      যদি আপনার চারপাশের পরিবেশ অনেক বেশি দূষিত হয় তাহলে এই পদ্ধতি আপনার ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ ধুলোবালি ও দূষণের বাকি উপাদানগুলো এই পদ্ধতিতে সঠিকভাবে পরিষ্কার হবে না।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

6h ago