রেড কার্পেটে যেভাবে নাজিফা তুষিকে 'হাওয়া' লুক দিলেন ফাইজা আহমেদ

ছবি: ফাইজা আহমেদের সৌজন্যে

বিনোদন জগতের অন্যতম অভিনেত্রী নাজিফা তুষি। সম্প্রতি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার ২০২২ এর রেড কার্পেটে তাকে দেখা গেছে চমৎকার লুকে। মানাসের ফাইজা আহমেদের ডিজাইন করা 'হাওয়া' চলচ্চিত্রের আদলে তৈরি শাড়িতে তুষির সৌন্দর্য, লাবণ্য ও তার চরিত্রটির রহস্য নিখুঁতভাবে ফুটে উঠেছে। 

ফাইজা আহমেদ বলেন, 'তুষি আমার কাছে হাওয়া সিনেমায় তার চরিত্র গুলতিকে খুঁজে পাওয়া যায় এমন একটি পোশাক চেয়েছিলেন।'

বিষয়টি শুনতে বেশ সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু সৃজনশীল কাজের জগতে সাধারণ কাজগুলো বেশি সূক্ষ্ম হতে হয়, এমন কথা ডিজাইনারদের কাছে প্রায়ই শোনা যায়।

তুষির চাহিদা অনুসারে ফাইজা আহমেদ প্রথমে গুলতির প্রতীকী উপাদানগুলো এক এক করে আলাদা করেন। তারপর সেগুলোর মধ্যে তুষি কোনটি হাইলাইট করতে চান তা জেনে রেড কার্পেটের সঙ্গে মানানসই হবে এমন ডিজাইন যোগ করেন।  

তুষির জন্য শাড়িই বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ফাইজা। এমন একটি শাড়ি, যেটি গতানুগতিক শাড়ির ডিজাইনে ভিন্নতা এনে নিজেই একটি মাস্টারপিস হিসেবে ধরা দেবে। সোনালি রঙের চিকন পাড় এবং কালো রঙের বারো গজ সিল্কের শাড়িটি যেমন গুলতির রহস্যময় ঐশ্বর্য তুলে ধরে, তেমনি শাড়ির প্রতিটি সূক্ষ্ম ভাঁজ যেন কোনো গুপ্ত মন্ত্রের গল্প বলে!

তারপর আসে পেটিকোটের পালা। ফাইজা এখানেও তার প্রতিভা দেখিয়েছেন। পেটিকোট যেহেতু শাড়িরই একটি অংশ, তিনি এ ক্ষেত্রেও ভিন্নতা এনেছেন।

পেটিকোটের ব্যাপারে ফাইজা বলেন, 'সিনেমায় গুলতিকে আমরা সাপুড়েদের মতো গোড়ালির ওপরে শাড়ি পরতে দেখেছি। তাই আমি শাড়ির নিচে পেটিকোট পরার নিয়ম থেকে বাইরে বেরিয়ে এটিকে লাইমলাইটে রাখার কথা ভেবেছি।'

রাজশাহী বলাকা সিল্কের ধূসর-কালো ক্যানভাসের শাড়িতে দেখা গেছে বিভিন্ন রঙে হাতে বোনা পদ্মফুল। এটি একদিকে যেমন গুলতি চরিত্রের সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছে, তেমনি সমুদ্রের গভীরতা ও রহস্যের আকর্ষণকেও ফুটিয়ে তুলেছে। শাড়িটি এমনভাবে পরানো হয়েছে যাতে পেটিকোট বা শাড়ির সৌন্দর্য কোনোটিই ঢাকা না পড়ে।

তবে সন্ধ্যার শোস্টপার ছিল তুষির হাই-নেক ব্যাকলেস ব্লাউজ। 'গুলতি'র প্রতীক হিসেবে তুষির পিঠে যে তামার সাপ দেখা গেছে, তা ফাইজা আহমেদ ভাকুর্তার স্থানীয় তাম্রশিল্পীর কাছ থেকে তৈরি করেছিলেন।

তবে এমন চমৎকার লুকে দেখা যায়নি কোনো গ্ল্যামারাস কানের দুল বা নেকলেস। এমন সিদ্ধান্তে ভরসা করার জন্য তুষির প্রশংসা করে ফাইজা বলেন, 'আমি চেয়েছি তার পিঠে থাকা সাপ আর কানের ছোট হীরার স্টাডই হোক একমাত্র এক্সেসরিজ। সেদিন সন্ধ্যায় গয়না হিসেবে এটুকুই ছিল। এ বিষয়ে আমার প্রতি বিশ্বাস রাখার জন্য তুষির কাছে আমি কৃতজ্ঞ।'

জুতোর ক্ষেত্রেও তুষিকে দেওয়া হয়েছে ভিন্ন লুক। গ্লিটারি পাম্পের পরিবর্তে তুষি পরেছেন কালো স্কুল-গার্ল বুট, যা এই লুকে অন্য মাত্রা যোগ করেছে।

প্রতিটি ছোট ছোট বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়ায় ফাইজা আহমেদের ডিজাইন নাজিফা তুষিকে যেন জীবন্ত শিল্পে পরিণত করেছে। রেড কার্পেটে এমন লুক ফ্যাশন ও সিনেমার এক নিখুঁত প্রদর্শনী, যেখানে সৃজনশীলতা অনন্য উপায়ে আলিঙ্গন করেছে ঐতিহ্যকে।

অনুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া

Comments

The Daily Star  | English

Ignore Gen Z at your peril, experts tell Nepal govt

Prominent personalities warn government and parties not to dismiss the demands of youths

1h ago