বন্ধুত্ব আর আগের মতো নেই বুঝবেন যেভাবে

ছবি: সংগৃহীত/ উইকিমিয়া কমনস

সুখ-দুঃখ, হতাশা-ক্ষোভ, চাওয়া-পাওয়া এ সবকিছু আর কাউকে বলা যাক না যাক, বন্ধুকে বলে মন হালকা করে নেওয়া যায় ঠিকই। জীবন চলার পথে ভালো বন্ধু থাকাটা জরুরি। 

তবে বন্ধু তৈরি করা কঠিন এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন পরিচিতি তৈরি করতে কয়েক ডজন ঘণ্টা সময় একে অপরের সঙ্গে কাটানো প্রয়োজন। আর ভালো বন্ধুত্বের জন্য প্রয়োজন কয়েকশ ঘণ্টা। যে সময় একটা নতুন বন্ধুত্বে দেওয়া প্রয়োজন তা আসলেই অনেক সময় এবং ধৈর্যের ব্যাপার। এ কারণে পুরনো বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করি আমরা সবাই। তবে কিছু লক্ষণে বুঝতে পারবেন, প্রিয় বন্ধুটির সঙ্গে তৈরি হয়েছে দূরত্ব। আগের মতো আর স্বতঃস্ফূর্ত সম্পর্ক নেই আপনাদের মধ্যে।

এখানে এমন ৩টি লক্ষণ তুলে ধরা হলো-

একসঙ্গে সময় কাটানোর উৎসাহ কমে যাওয়া

স্বাভাবিক বন্ধুত্ব পারস্পরিক আনন্দ ও উৎসাহের উপর ভিত্তি করে হয়। হ্যাঁ, এটাও ঠিক আমাদের জীবন দিন দিন কঠিন থেকে কঠিনতর হতে থাকে, আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়ি নানা কাজে। ফলে আগের মতো ঘন ঘন কথা কিংবা দেখা হয় না। কিন্তু আন্তরিকতা আর টান থাকলে এ সবকিছুর মধ্যেই একসঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর সময় আর আগ্রহ খুঁজে পান বন্ধুরা।

একবার-দুবার এমন হতে পারে যে বন্ধু নানা কারণে একদমই সময় দিতে পারছেন না। তবে যদি প্রতিবারই দেখেন বন্ধুর পক্ষ থেকে আগ্রহ আসছে না, তিনি আপনাকে আর গুরুত্ব দিচ্ছেন না তখন বুঝবেন এই বন্ধুত্বটা হয়তো কেবল আপনি একাই ধরে রেখেছেন। দুজনের মধ্যে যথেষ্ট দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে।  

দুজনের সমস্যা কথা বলে সমাধানের চেষ্টা না করা

একটি সুস্থ সম্পর্কের ক্ষেত্রে বন্ধুরা নিজেদের মধ্যে মন খুলে কথা বলে। দুজনের মধ্যে কোনো ঝামেলা হলে, মন খুলে সরাসরি কথা বলে ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে কখনো এমন হতে পারে যে, এক পক্ষ আর মন খুলে কথা বলতে চাচ্ছে না। শুনতেও হয়তো চাচ্ছে না অপরপক্ষের কথা।

অন্য পক্ষ হয়তো শুরুতে চেষ্টা করে, কিন্তু বন্ধুর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে তারাও একসময় মন খুলে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। তখন বন্ধুত্বে বিরক্তি আর তিক্ততা ভর করে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করে বন্ধুত্ব ধরে রাখার চেষ্টা করলে সে সম্পর্কে একটা দূরত্ব থেকেই যায়।

চিন্তাভাবনায় ভিন্নতা চলে আসা

জীবন তার নিজ গতিতে এবং নিজের মতো চলে আর সেইসঙ্গে চিন্তার জগতে পরিবর্তন আসে মানুষের। কিছু বন্ধুত্ব সঙ্গত কারণে আর আগের মতো থাকে না।বন্ধুত্ব রাখতে একই অবস্থায় সবাইকে থাকতে হবে এমনটা না। কিন্তু অনেকেই মনে করেন, একই সরলরেখায় থাকাটা জরুরি এবং যখন সেটা যখন তারা পান না তখন বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। বন্ধু হয়ে যান অপরিচিতের মতো।

পরিশেষে, বন্ধুর সঙ্গে দূরত্বের আভাস পেলে কীভাবে সেগুলো দূর করে সব আগের মতো করে নেওয়া যায় তার পথ খুঁজতে চেষ্টা করুন। বন্ধুত্ব বজায় রাখতে দুজনের পক্ষ থেকেই সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করতে হবে। নয়তো ঝামেলাগুলো বাড়তে থাকবে এবং বন্ধুত্বে বাধা সৃষ্টি করবে। 

তবে যেকোনো মূল্যে বন্ধুত্ব ধরে রাখতেই হবে ব্যাপারটা কিন্তু এমনও না। মনে রাখবেন, দুই পক্ষের অনুভূতি যদি পরস্পরের জন্য একই না হয় তবে সেখানে বন্ধুত্বের বিকাশ হয় না।  

তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে

Comments

The Daily Star  | English

Trump announces 'massive' Japan trade deal including 15% tariff

Trump has vowed to hit dozens of countries with punitive tariffs if they don't strike a deal with the United States by next month.

15m ago