বিজ্ঞাপনী সংস্থায় যোগ দিতে চাইলে যা জানতে হবে

বিজ্ঞাপনী সংস্থায় চাকরি
ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার অফিসে গিয়ে আমি রীতিমতো অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। কী চমৎকার আর প্রাণবন্ত পরিবেশ! ডিজাইনাররা কম্পিউটার স্ক্রিনে মগ্ন হয়ে কাজ করছেন, কপিরাইটাররা নিরলসভাবে টাইপ করে চলেছেন আর অ্যাকাউন্ট ম্যানেজাররা মিটিংয়ের মধ্যেও ছুটোছুটি করে বেড়াচ্ছেন।

দেয়ালগুলোয় ঝুলছে স্টোরিবোর্ড, যেখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রচার বা বিজ্ঞাপনের ধারণা। অফিসজুড়ে প্রতিটি কোনায় যেন সৃষ্টিশীলতার ঝলক। আমার ধারণা ছিল, বিজ্ঞাপন নির্ভর করে আকর্ষণীয় শুটিং আর জিঙ্গেলের ওপর। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে জেনে গেলাম যে, প্রতিটি সফল বিজ্ঞাপন বা প্রচারের পেছনে থাকে একটি টিমের কঠোর পরিশ্রম। এই টিমের সদস্যরাই গোটা বিষয়টি বাস্তবায়ন করেন।

বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কর্মরতদের জীবন একেবারেই অন্যরকম, অন্য সব চাকরিজীবীদের মতো নয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চাপ, অনেক রাত পর্যন্ত অফিস করা এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে চিন্তা করা বা ব্রেইনস্টর্মিং করা এখানে খুব স্বাভাবিক। একটি বিজ্ঞাপনকে সফলভাবে শেষ করতে বিজ্ঞাপনী সংস্থার সৃষ্টিশীল মানুষেরা যে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন তা প্রায়শই সবার সামনে আসে না।

মিডিয়াকম লিমিটেডের ক্লায়েন্ট রিলেশন শাখার সিনিয়র অ্যাকাউন্ট এক্সিকিউটিভ আলী আশজাহি রুফাই বলেন, 'প্রতিটি দিনেই গতিশীল। এই গতিশীল দিনের নানা সমস্যা সমাধানের জন্য রয়েছে বিজ্ঞাপনী সংস্থা। তা সে সমস্যা ব্যবসায়িক, সামাজিক কিংবা পরিবেশগত; যাই হোক না কেন। বিজ্ঞাপনদাতা হিসেবে প্রতিদিনই আপনি নতুন চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগের মুখোমুখি হন। একদিন সকাল থেকে হয়তো আপনি শিশুর ত্বকের যত্নের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যের একটি প্রেস বিজ্ঞাপনে কাজ করছেন। সন্ধ্যা নাগাদ দেখা যাবে আপনার হাতে ইস্পাত কোম্পানির জন্য সাহসী বিজ্ঞাপনের ডিজাইন। দিনভর এই বৈচিত্র্যই নিশ্চিত করবে যে আপনার কর্মজীবন কখনোই একঘেয়ে হয়ে উঠবে না।'

একটি সুপরিচিত বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কপিরাইটার হিসেবে কাজ করেন তাসমিয়া ইসলাম।

নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, 'কোনো এজেন্সিতে চাকরি করলে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী জীবনযাপন করা চ্যালেঞ্জিং। যেকোনো মুহূর্তে কাজ শুরু হতে পারে। আমার দিন যে সকাল ৯টাতেই শুরু হবে এমন কোনো কথা নেই। দুপুর ১২টা বা বিকেল ৩টায়ও দিন শুরু হতে পারে। নিজের বোঝাপড়া বাড়াতে সকালের সময়টুকু আমি টেলিভিশন ও অনলাইন মাধ্যমে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখি এবং সেসব নিয়ে গবেষণা করি। সকাল ১১টা নাগাদ আমি কাজে প্রবেশ করি এবং দিনের কাজের একটি তালিকা তৈরি করি। এরপর জরুরি কাজগুলো নিয়ে ক্লায়েন্ট সার্ভিস এক্সিকিউটিভদের সঙ্গে মিটিং করি। দেখা যায়, বেলা যত বাড়ে ছোট ছোট কাজের সংখ্যাও তার সঙ্গে বাড়তে থাকে।'

তিনি আরও বলেন, 'একটি স্ক্রিপ্ট লেখার সময় আমি স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানার এবং ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলে পুরো বিষয়টির ধারণা নিই। এই ধরনের সেশনগুলো দুই-তিন ঘণ্টা দীর্ঘ হতে পারে। কখনও কখনও তা আরও বেশি সময় ধরে চলে। অনেক সময় চিন্তার ক্ষেত্রে নানা বাধা তৈরি হয়। সেই বাধা এড়াতে আমরা মাঝে মাঝে বিরতি নিই, কিছু খাওয়া দাওয়া করি, আরাম করে টেলিভিশনও দেখি। সাধারণত আমার কাজ রাত ৮টার দিকে শেষ হয়। কিন্তু কখনও কখনও এমন হয় যে, পরিকল্পনার চূড়ান্ত ফলাফল দেখতে বা পর্যালোচনা করার জন্য আরও দেরি করতে হয়, যেন কোথাও কোনও বানান বা নকশাগত ত্রুটি না থাকে।'

বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোয় নানান ভূমিকায় কর্মীরা কাজ করেন। কপিরাইটিং এবং গ্রাফিক ডিজাইনার থেকে শুরু করে ভিডিও প্রোডাকশন, মোশন গ্রাফিক্স এবং ডেটা অ্যানালিটিক্স পদে এসব সংস্থায় কর্মীরা কাজ করে থাকেন। বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এন্ট্রি লেভেলে চাকরি পেতে আপনার স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। তবে এটাও ঠিক যে, সংস্থাগুলো আনুষ্ঠানিক লেখাপড়া বা যোগ্যতার চেয়ে দক্ষতাকে অগ্রাধিকার দেয়। অনেক শিক্ষার্থীই বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ শুরু করেন। এতে দ্রুত তারা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে শুরু করেন, যা পরবর্তী ক্যারিয়ারের সিঁড়ি হিসেবে কাজ করে।

আলী আশজাহি বলেন, 'বিজ্ঞাপনী সংস্থায় তিনটি প্রধান বিভাগ থাকে। এগুলো হলো অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট, ক্রিয়েটিভ এবং স্ট্র্যাটেজি। সম্পতি অনেক গণযোগাযোগ বিষয়ে স্নাতকরা বিজ্ঞাপন জগতে প্রবেশ করছেন। কারণ তাদের পড়াশোনা এই ক্ষেত্রের জন্য বেশ উপযুক্ত। এছাড়া বিজনেস ও মার্কেটিং বিষয়ে স্নাতকরা অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট ও স্ট্র্যাটেজি বিভাগে বেশ ভালো করেন। অন্যদিকে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ যেমন ভিজুয়ালাইজার পদের জন্য শিল্পকলা বা গ্রাফিক ডিজাইনার বিষয়ে লেখাপড়া করা ব্যক্তিদের পছন্দ করা হয়। যারা কপিরাইটিং করেন তাদের আবার সমসাময়িক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রবণতা বা ট্রেন্ডের বিষয়ে বেশ ধারণা থাকতে হয়।'

আলী আরও বলেন, 'বড় এজেন্সিগুলো সাধারণত পূর্ণকালীন কর্মী নিয়োগ করে। অন্যদিকে স্টার্টআপগুলো পার্টটাইম কর্মী দিয়ে কাজ চালায়। যেগুলোয় কাজ করে শিক্ষার্থীরা চমৎকার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।'

'আবার এজেন্সিগুলো প্রায়ই অ্যাকাউন্ট এক্সিকিউটিভ, কপিরাইটার এবং ভিজ্যুয়ালাইজারের মতো পদের জন্য এন্ট্রি লেভেলের কর্মী নিয়োগ দেন। এজন্য প্রাথমিক যে গুণাবলী দেখা হয় সেগুলো হলো প্রার্থীর মধ্যে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা আছে কি না এবং তিনি কার্যকরভাবে তাকে দেওয়া দায়িত্ব সম্পন্ন করতে পারছেন কি না।'

আলী আজশাহির মতে, অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট পদে কাজ করলে ভবিষ্যতে ভালো ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। কারণ এই পদে আপনি বিভিন্ন খাতের মানুষের সঙ্গে মিশতে পারবেন, কাজ করতে পারবেন। যা আপনার জ্ঞান বাড়াবে এবং একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এই নেটওয়ার্ক এবং ব্যবসায়ীক জ্ঞান আপনার ক্যারিয়ারের দ্রুত অগ্রগতিতে সহায়তা করবে। ডিজিটাল অ্যাডভারটাইজার্স এবং ক্রিয়েটিভ বিভাগেও কাজের ভালো সুযোগ রয়েছে। কারণ অনেক স্থানীয় ও বহুজাতিক কোম্পানি নিজেদের প্রতিষ্ঠানেই এ দুটি বিভাগে বিনিয়োগ করে। ফলে দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটারের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তাদের সামনে তৈরি হচ্ছে ক্যারিয়ার তৈরির বড় সুযোগ।

এছাড়া, বিজ্ঞাপনী সংস্থার কাজের পরিবেশ অন্যান্য যেকোনো খাত থেকে আলাদা।

স্পেলবাউন্ড লিও বারনেটের প্ল্যানিং অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি বিভাগের এক্সিকিউটিভ আনোয়ারুল হক আনসারি বলেন, 'বিজ্ঞাপনী সংস্থায় যারা কাজ করেন তারা বিশ্বাস করেন যে ধীরগতিতে এবং স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কাজ করলে নিজের ভেতরের সৃষ্টিশীলতাকে জাগিয়ে তোলা যায় এবং এর মাধ্যমে ক্লায়েন্টকে চমৎকার কাজ উপহার দেওয়া যায়। যদিও হাই-প্রোফাইল ক্লায়েন্ট যখন কঠোরভাবে সময়সীমা বেধে দেন, তখন সেই কাজের জন্য তীব্র চাপ অনুভূত হয়।'

বিজ্ঞাপনী সংস্থায় যারা কাজ করতে চান তাদের ভেতরে সৃজনশীলতা এবং চমৎকার অভিযোজন ক্ষমতা থাকতে হয়।

তাসমিয়া বলেন, 'এজেন্সিতে আপনার দায়িত্ব পালনের জন্য সৃজনশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যে পদেই থাকুন না কেন, সৃজনশীলতাই আপনাকে সব কাজে উৎরে যেতে সাহায্য করবে। আর এই সৃজনশীলতাকে লালন করতে সবসময়ই আপনাকে নতুন জিনিস শিখতে হবে, শেখার মানসিকতা রাখতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি মনে করি, মানুষ সবচেয়ে বড় ভুল করে যখন সে শেখা বন্ধ করে দেয়। ভেবে নেয় যে, হয়তো বিষয়টি আর গুরুত্বপূর্ণ নয়। উদাহরণ হিসেবে বলি, আমি হয়তো ব্যাংকিং বিষয়ে আগ্রহী নই, কিন্তু সেই বিষয়ে যদি নতুন কোনো দৃষ্টিভঙ্গী শিখে রাখতে পারি তাহলে নতুন ধারণা বা পরিকল্পনা করতে তা আমাকে সাহায্য করতে পারে। আমি ট্রেন্ড, সংস্কৃতি, খবর এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মিম সম্পর্কেও আপডেট থাকি। শিশুদের কার্টুন, বিশ্বজুড়ে চলমান বিজ্ঞাপন এবং ইউটিউব শর্টস থেকেও আমি বিভিন্ন ধরনের ধারণা নিই। বিভিন্ন ধরনের সিনেমা দেখে ও বই পড়ার মাধ্যমে আমি চিন্তাভাবনাকে প্রসারিত করি।'

আনোয়ারুল বলেন, 'যেসব সংস্থায় ৩৬০ ডিগ্রি মার্কেটিং করা হয়, ডিজিটাল চ্যানেলের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় সেখানে উদ্ভাবনী শক্তি থাকা অপরিহার্য। একটি পণ্যের বিষয়ে বিজ্ঞাপনে ''ওয়াও ফ্যাক্টর'' তৈরি করা এবং আমাদের কাজের মাধ্যমে যেন ক্লায়েন্টের প্রত্যাশা পূরণ হয় তা নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য। ফলে এই খাতে কাজ করতে হলে আপনার ভেতর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে তা হলো সৃজনশীলতা।'

অনেকেই মনে করেন, বিজ্ঞাপন কেবল সৃজনশীলতা আর গ্ল্যামারের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বাস্তবতা আরও অনেক জটিল।

তাসমিয়া বলেন, 'মানুষ মনে করেন, বিজ্ঞাপন তৈরি খুব মজার এবং খেলার মতো। কিন্তু এর সঙ্গে ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগ, বিশ্লেষণ এবং শেষ মুহূর্তের ডেডলাইন পূরণের চাপও থাকে। আমরা কেবল বিজ্ঞাপন তৈরি করি না এবং কেবল তারকাদের সঙ্গেই কাজ করি না।'

এজেন্সিকর্মীর জন্য কেবল সৃজনশীলতা প্রয়োজন এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন, 'কৌশল এবং সঠিকভাবে তার বাস্তবায়ন করতে জানাও খুব জরুরি।'

দিনশেষে বিজ্ঞাপন খাতের সবচেয়ে কঠিন কাজটি হলো আইডিয়া বা ধারণা বিক্রি করা।

তাসমিয়ার মতে, 'আমাদের কাজের সবচেয়ে কঠিন অংশ সবসময় নতুন নতুন আইডিয়া দেওয়া নয়, বরং ক্লায়েন্টকে সেই আইডিয়ার ব্যাপারে আস্থা দেওয়া বা তার আস্থা অর্জনটাই কঠিন।'

'সমস্যার সমাধান করতে জানা গুরুত্বপূর্ণ। সমস্যায় পড়লে আপনাকেই তার সমাধান করতে হবে এবং সেই সঙ্গে যে চ্যালেঞ্জগুলো আসবে সেগুলোও মোকাবিলা করার সামর্থ্য রাখতে হবে', বলেন আনোয়ারুল।

তিনি অবশ্য সময় ব্যবস্থাপনার ওপরও জোর দিলেন। সেই সঙ্গে বাজারের প্রবণতা বোঝার গুরুত্বের কথাও বললেন।

তিনি বলেন, 'সৃজনশীলতা থাকা জরুরি। কিন্তু এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে যুক্তি এবং সম্ভাব্যতাও। একটি শক্তিশালী বিপণন পদ্ধতি সহজেই দর্শকের কাছে যথাযথ বার্তাটি পৌঁছে দিতে পারে।'

অনেকের জন্য, মাথার ভেতরে থাকা আইডিয়াগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়া ভীষণ রোমাঞ্চকর।

তাসমিয়া বলেন, 'আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় কাজটি ছিল আর্মি গলফ গার্ডেনে একটি স্কুলের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা। ওই পুরো আয়োজনটির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সব কাজ আমি নিজেই করেছিলাম, আর এটি আমার নিজেকে গড়ে তুলতে ভীষণ সহায়তা করেছিল। আমি স্কুলটির ওপর একটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করি এবং অনুষ্ঠানের মার্কেটিং থেকে শুরু করে টিকিটিং পর্যন্ত সবকিছুর পরিকল্পনাও করি। অনুষ্ঠানের নকশা ও শব্দবিন্যাস এটিকে অন্য আয়োজনের চেয়ে আলাদা করে তুলেছিল।'

তাই আপনি যদি একটি গতিশীল ও দ্রুতগতির ক্যারিয়ার প্রত্যাশী হয়ে থাকেন, যে ক্যারিয়ারে সৃজনশীলতার পাশাপাশি কৌশলকেও কাজে লাগানো যাবে; তাহলে বিজ্ঞাপনী সংস্থা আপনার জন্য উপযুক্ত কর্মক্ষেত্র হতে পারে।

অনুবাদ করেছেন শেখ সিরাজুম রশীদ

 

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

20h ago