সন্তান দূরে, বাবা-মায়ের এম্পটি নেস্ট সিনড্রোমে করণীয়

সন্তান দূরে
ছবি: সংগৃহীত

'এম্পটি নেস্ট' কথাটি শুনে শূন্য পাখির বাসা চোখে ভাসছে নিশ্চয়ই?  'এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম' বিষয়টা অনেকটা এই শূন্য পাখির বাসার মতোই। এটি একটি মানসিক অবস্থা, যেটায় সন্তান দূরে বসবাস করলে অনেক বয়স্ক বাবা-মায়েরা ভোগেন।

এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদের কাছ থেকে।

এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম কী

অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন বলেন, সন্তানরা যখন পড়ালেখা, চাকরি বা অন্য কোনো কারণে বাবা-মায়ের কাছ থেকে দূরে কোথাও (দেশে বা বিদেশে) চলে যান, তখন বয়স্ক বাবা-মায়ের মনে যে শূন্যতা, মনোবেদনা আর আবেগীয় জটিলতা তৈরি হয় সেটাকে বলা হয় এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম।

পাখি তার বাচ্চাদের লালন-পালন করে, উড়তে শেখায়, মুখে তুলে খাবার খাইয়ে দেয়। এরপর বাচ্চারা বড় হয়ে পাখির বাসা ছেড়ে চলে যায়। তখন পাখির বাসাটি শূন্য হয়ে পড়ে। এই বিষয়টিকে তুলনা করেই 'এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম' বলা হয়।

তবে এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম কোনো মানসিক রোগ নয়। এটি সন্তানদের একে একে দূরে চলে যাওয়ার কারণে বাবা-মায়ের মনে যে শূন্যতা, বেদনা, কষ্ট এবং একাকিত্ব তৈরি হয় সেই মানসিক অবস্থা।

এম্পটি নেস্ট সিনড্রোমে কারা বেশি ভোগেন

সন্তানের সঙ্গে অতিমাত্রায় সম্পর্কযুক্ত বাবা-মা এবং যে সন্তান বেশি বাবা-মায়ের ওপর নির্ভরশীল সে পরিবারে এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে। বাবা-মা যদি খুব বেশি এককেন্দ্রিক থাকেন, তাদের সামাজিক দক্ষতা কম থাকে তখন এম্পটি নেস্ট সিনেড্রামের আশঙ্কা আরও বেশি।

লক্ষণ

১. মন খারাপ থাকা

২. একাকিত্ব ও বিষণ্নতায় ভোগা

৩. হতাশা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা

৪. মানসিক চাপে থাকা

৫. জীবনের অর্থ খুঁজে না পাওয়া

৬. কাজে মন না দেওয়া

৭. ভুলে যাওয়া

৮. মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া

৯. নিজেকে গুটিয়ে রাখা, ঘুমের সমস্যা

করণীয়

অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন বলেন, যেহেতু এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম মানসিক রোগ নয় বরং কতগুলো লক্ষণের সমষ্টি, তাই লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে সাইকোথেরাপি, কাউন্সিলিং এই সমস্যার চিকিৎসায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এ ছাড়া সন্তানের সঙ্গে দূরবর্তী যোগাযোগ বাড়িয়ে দেওয়া, যেমন- মোবাইলে কথা বলা, ভিডিও কলে কথা বলা, বাবা-মায়ের পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় করার ব্যবস্থা গ্রহণ, সামাজিক দক্ষতা বাড়ানোর দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রয়োজন হলে বিষণ্নতারোধী ওষুধ প্রয়োগ করতে পারেন চিকিৎসক।

 

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

3h ago