জব্বারের বলীখেলার ১১৬ তম আসর বসছে ২৫ এপ্রিল

শুরুর ধারাবাহিকতা মেনে প্রতি বছর বাংলা সনের ১২ বৈশাখ এ খেলার আয়োজন করা হয়। ফাইল ছবি। আলোকচিত্রী: রাজিব রায়হান

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বাংলার যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি শারীরিকভাবে তৈরি করতে ১৯০৯ সালের চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে যে বলীখেলার প্রচলন হয়েছিল, তার ১১৬ তম আসর বসছে আগামী ২৫ এপ্রিল।

চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে যাওয়া এ আয়োজনটি শুরু হয়েছিল শহরের আগেকার বদরপাতি এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগরের হাত ধরে। কালক্রমে তারই নামানুসারে এটি পরিচিতি পেয়েছে 'জব্বারের বলী খেলা' নামে।

কালের ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন এখন ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা নামকরা বলীরা (কুস্তিগীর) এই খেলায় অংশ নেন।

খেলা ঘিরে আয়োজিত মেলায় এক বেলুন বিক্রেতা। স্টার ফাইল ছবি

শুরুর ধারাবাহিকতা মেনে প্রতি বছর বাংলা সনের ১২ বৈশাখ এ খেলার আয়োজন করা হয়। খেলাকে কেন্দ্র করে ১১ থেকে ১৩ বৈশাখ বসে বৈশাখী মেলা।

এবারও এই খেলা ও বৈশাখী মেলা সু্ষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, সিটি করপোরেশন ও মেলা কমিটি  নানা উদ্যোগ নিয়েছে।

লালদীঘি ময়দানে স্থাপন করা হবে বলীখেলার মূল রিং। নগরীর কোতোয়ালী থানার মোড় থেকে শুরু করে আন্দরকিল্লা মোড়, পশ্চিমে সিনেমা প্যালেস মোড় ও পূর্বে জেল রোডে (বদরপাতি) বসানো হবে বৈশাখী মেলার স্টল।

শিশুদের পুতুল ও খেলনা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় সব পণ্য পাওয়া যায় এ মেলায়।

প্রতি বছর এই মেলা থেকে কেনাকাটা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শায়লা বিনতে হোসাইন। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'ঘর সাজাতে, জীবন গোছাতে যা যা প্রয়োজন তার সব কিছুই মেলে এই মেলায়। বিশেষ করে শীতল পাটি, তালপাতার পাখা, বেতের তৈরি মোড়া, ফুলের ঝাড়ু বেশ জনপ্রিয়। প্রতি বছর এই বৈশাখী মেলায় আসি। কিছু না কিছু কেনা হয় এখান থেকে।'

মেলায় বাঁশ-বেতের তৈরি পণ্যের স্টল। স্টার ফাইল ছবি

গত বছর বলীখেলার ১১৫ তম আসরে বিজয়ী হয়েছিলেন কুমিল্লা জেলার হোমনা এলাকার বাসিন্দা 'বাঘা শরীফ'। তিনি কুমিল্লা সদরের রাশেদ বলীকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

আয়োজকরা বলছেন, ইতোমধ্যে ১৫০ জন বলী এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন।

বলী খেলা ও মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং আবদুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিন দিনের বর্ণাঢ্য এ আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লালদীঘি মাঠে ২০ এপ্রিল থেকে শুরু হবে অস্থায়ী রিং তৈরির কাজ।'

শওকত আনোয়ার আরও বলেন, '১৯০৯ সাল থেকে আমরা তিন পুরুষ চট্টগ্রামের এই ঐতিহ্যবাহী খেলার আয়োজন করে আসছি। মাঝে করোনা মহামারির কারণে দুই বছর খেলা হয়নি।'

এবারের এ আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতায় আছে গ্ৰামীণফোন।

 

Comments

The Daily Star  | English

One killed in crude bomb blast during clash at Mohammadpur Geneva Camp

The victim, Zahid, was not involved in the clash and had gone out with friends when he got caught in the middle of the violence, family says

26m ago