মণিপুরে রাহুল গান্ধীর গাড়িবহর আটকে দিল পুলিশ

কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা রাহুল গান্ধী। ছবি: দ্য স্টেটসম্যান
কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা রাহুল গান্ধী। ছবি: দ্য স্টেটসম্যান

ভারতের ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে প্রায় দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা বিক্ষোভ ও সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর অন্যতম চুরাচান্দপুর জেলায় সফরে গিয়ে বিপত্তির মুখে পড়েছেন দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা রাহুল গান্ধী।

আজ বৃহস্পতিবার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে রাহুল গান্ধীর গাড়িবহর পুলিশ আটকে দিলে তিনি হেলিকপ্টারে করে চুরাচান্দপুরে পৌঁছান।

পুলিশের ভাষ্য, মণিপুরের রাজধানী ইমফাল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে বিষ্ণুপুরে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে রাহুল গান্ধীর গাড়িবহর থামানো হয়। এরপর কংগ্রেস নেতা ইমফালে ফিরে যান এবং সড়কপথে যাত্রার পরিবর্তে একটি হেলিকপ্টারে করে তার গন্তব্যে পৌঁছান।

কতৃপক্ষ দাবি করেছে, রাহুল গান্ধী যে পথে আগাচ্ছিলেন, সেখানে নারী বিক্ষোভকারীদের একটি বড় দল অবস্থান নিয়েছিল। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, 'সতর্কতার অংশ হিসেবে আমরা বিষ্ণুপুরে গাড়িবহরকে থামার অনুরোধ জানাই।'

তবে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ওই নারীরা প্রকৃতপক্ষে রাহুল গান্ধীর গাড়ীবহর থামানোর কারণে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রকাশ করছিল। রাহুল গান্ধী ফিরে যান তারা সেটা চাননি। চেয়েছিলেন রাহুল গান্ধী যাতে চুরাচান্দপুরের পাশাপাশি তাদের গ্রামও করেন।

এক বিক্ষোভকারী নারী বলেন, 'তিনি (রাহুল গান্ধী) মণিপুরে এসেছেন মানুষ কী ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সে বিষয়ে জানতে। তিনি এখানে রাজনীতি করতে আসেননি। তাহলে কেন তারা সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে?'

এ বিষয়ে রাহুল এক টুইট বার্তায় বলেন, 'আমি মণিপুরের ভাই ও বোনদের কথা শুনতে এসেছি। এখানে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ আমাকে স্বাগত জানিয়েছে ও আমার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে সরকার আমাকে বাধা দিচ্ছে। মণিপুরের অবস্থার উন্নতি হওয়া প্রয়োজন। আমাদের একমাত্র প্রাধান্যের বিষয় হওয়া উচিৎ শান্তি প্রতিষ্ঠা।'

চুরাচান্দপুরের শরনার্থী শিবিরে গিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল রাহুলের।

এই রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ৩০০ শরণার্থী শিবিরে থাকছেন।

দীর্ঘদিন ধরে মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি এবং নাগা জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর বিরোধ চলছে।

মেইতেই সম্প্রদায় অনেক দিন ধরে তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হওয়ায় দাবি জানিয়ে আসছে। উপজাতিদের জন্য মণিপুরে আইনগত বেশ কিছু সুযোগসুবিধা ও কোটা রয়েছে।

সম্প্রতি হাই কোর্ট মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্তদের তালিকায় আনা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন। যার জেরে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর।

হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিবাদে গত ৩ মে 'অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন মণিপুর'(এটিএসইউএম) মিছিল করে। ওই মিছিল থেকেই সহিংসতার সূত্রপাত হয়।

বিভিন্ন সময়ে চলা এসব সহিংসতার ঘটনায় এ অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

10h ago