পাকিস্তানে চলছে ভোট, কোণঠাসা ইমরান খানের পিটিআই

পাকিস্তানের নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ তিন নেতা। ডান থেকে বাঁয়ে: বিলাওয়াল ভুট্টো, ইমরান খান ও নেওয়াজ শরীফ। ছবি: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে সংগৃহীত ছবি নিয়ে কোলাজ
পাকিস্তানের নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ তিন নেতা। ডান থেকে বাঁয়ে: বিলাওয়াল ভুট্টো, ইমরান খান ও নেওয়াজ শরীফ। ছবি: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে সংগৃহীত ছবি নিয়ে কোলাজ

ইন্টারনেট বন্ধের মধ্যদিয়ে পাকিস্তানে শুরু হয়েছে সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। তবে অন্য সব কিছুকে ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠে এসেছে দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে বিবেচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অনুপস্থিতি। 

বিবিসি ও ডন জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ, যা বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। দেশটিতে ১২ কোটি ৮০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার রয়েছে। দেশজুড়ে প্রায় ৯০ হাজার ৬৭৫টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইমরান খান (৭১) কারাবন্দী থাকার কারণে এ বছরের নির্বাচনে অংশ নিতে পাচ্ছেন না। তিনি ও তার সমর্থকরা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও শাস্তিকে 'রাজনৈতিক মদদপুষ্ট' ও 'ষড়যন্ত্র' হিসেবে অভিহিত করেছে।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ফাইল ছবি: রয়টার্স
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ভোটগ্রহণ শুরুর এক সপ্তাহ আগে ইমরান খানকে আরও দুই অভিযোগে কারাদণ্ড দেয় পাকিস্তানের আদালত। এর আগে তিনি তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন।

ইমরান খানের পাশাপাশি, এবারের নির্বাচনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রার্থীরাও। তাদের পছন্দের প্রতীক 'ক্রিকেট ব্যাট' বরাদ্দ দেয়নি দেশটির নির্বাচন কমিশন। স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন পিটিআইর প্রার্থীরা।

নির্বাচনের আগে থেকেই ইমরান খান ও তার দলের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে নানা আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পিটিআইর সমর্থনপুষ্ট হলেও সে বিষয়ে তথ্য প্রচারে আসে বাধা।

সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, পিটিআইকে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে ও অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। দলের অনেক নেতা কারাবন্দী আছেন এবং অনেকেই দল ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আর অনেকেই পুলিশী অভিযান থেকে বাঁচতে পলাতক রয়েছেন। দলটির শুরু থেকে ক্রিকেট ব্যাট মার্কা নিয়ে নির্বাচনে লড়েছে, যা নিরক্ষর জনগোষ্ঠী ও ভোটারদের একটি বড় অংশের কাছে সুপরিচিত প্রতীক।

সব মিলিয়ে বলা যায়, একেবারে কোণঠাসা অবস্থায় থেকে নির্বাচনে লড়ছে ইমরান খানের দল। তা সত্ত্বেও, এ বছরের জানুয়ারিতে পরিচালিত গ্যালাপ জরিপে জানা গেছে, এখনো পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ইমরান। তবে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা নেওয়াজ শরীফের সঙ্গে ইমরানের ব্যবধান কমে এসেছে।

নির্বাচনের একদিন আগে গতকাল বুধবার বেলুচিস্তান প্রদেশে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রায় ৩০ জন নিহত হন। এ ঘটনায় দেশটিতে নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ দেখা দেয়। তবে কর্তৃপক্ষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিতের অঙ্গীকার করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কারণে ইমরান খান ও তার দলকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ইমরান খানের অনুপস্থিতিতে এই নির্বাচনে এগিয়ে আছেন বাকি দুই প্রার্থী বিলাওয়াল ভুট্টো ও নেওয়াজ শরীফ।

বিবিসি, গার্ডিয়ান ও এএফপি পূর্বাভাষ দিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ নেওয়াজ (পিএমএল-এন) এর নেতা নেওয়াজ শরীফ (৭৪) এই নির্বাচনে জয়লাভ করে চতুর্থ বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন।

ব্লুমবার্গ ব্রকিংস ইন্সটিটিউশনের বৈদেশিক নীতিমালা বিষয়ক ফেলো মাদিহা আফজালের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, 'নেওয়াজ শরীফ ক্ষমতায় ফিরলে দুই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমস্যা, বিশেষত, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং আগের তুলনায় আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে পড়া সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কে বজায় রাখা'।

Comments

The Daily Star  | English

BNP sticks to demand for polls by December

In a meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night, the BNP restated its demands that the next general election be held by December and the government immediately announce a roadmap to that end.

5h ago