সীতাকুণ্ড

বিস্ফোরণের পর থেকে খোঁজ নেই ফিলিং অপারেটর আব্দুল কাদেরের

সীমা রি-রোলিং মিলের অক্সিজেন প্ল্যান্টের ফিলিং অপারেটর আব্দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় সীমা রি-রোলিং মিলের অক্সিজেন প্ল্যান্টে ফিলিং অপারেটর হিসেবে ২০ বছর ধরে কাজ করে আসছিলেন নোয়াখালীর বাসিন্দা আব্দুল কাদের। আজ শনিবার বিকেলে বিস্ফোরণের সময় তিনি কারখানার ভেতর কাজ করছিলেন। তবে বিস্ফোরণের পর থেকে তার কোনো খোঁজ মিলছে না বলে জানিয়েছে পরিবার।
 
স্ত্রী, ২ মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কারখানার পাশেই কেশবপুরের গ্রামে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন আব্দুল কাদের।

তার স্ত্রী লক্ষ্মী আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিস্ফোরণের পর স্বামীর মোবাইলে বার বার ফোন করলে ধরেন ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী। তিনি জানান, বিস্ফোরণের ঘটনাস্থলে আছেন আব্দুল কাদের। তবে তিনি মারা গেছেন।'

যদিও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বিষয়টি এখনো ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করা হয়নি।

লক্ষ্মী আক্তার বলেন, 'দুপুরে ভাত খেয়ে কারখানায় যান আব্দুল কাদের। বিকেলে বিস্ফোরণের খবর পেয়ে আমি কারখানায় ছুটে যাই। কিন্তু আমাকে ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি।'

তিনি জানান, আব্দুল কাদের নোয়াখালীর মৃত মকবুল আহমেদের ছেলে। এই কারখানায় ১৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করে তিনি সংসার চলাতেন।

লক্ষ্মী আক্তার বলেন, 'বাবার মৃত্যুর খবর শুনে ছেলে রাশেদ হাসপাতালে ছুটে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে বাবার মরদেহ দেখতে পায়নি।'

'সন্তানদের নিয়ে এখন কী করব, কীভাবে বাঁচব' বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন লক্ষ্মী আক্তার।

বিস্ফোরণে আব্দুল কাদেরের মৃত্যু সংবাদ শুনে তার বাড়িতে ভিড় করেছেন প্রতিবেশীরা।

স্থানীয়রা জানান, ওই কারখানায় প্রতি শিফটে প্রায় ২০-২৫ জন কাজ করতেন।

বিস্ফোরণের সময় কারখানার ভেতরে ছিলেন সেখানকার মসজিদের মুয়াজ্জিন মোকতার আহমেদ।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনার সময় আমি মসজিদে আজান দিচ্ছিলাম, বিকট শব্দে আর কিছু মনে নেই। কীভাবে বেঁচে আছি জানি না।' 

স্থানীয়রা আরও জানান, বিস্ফোরণের ভয়াবহতা বয়ে বেড়াচ্ছে পুরো কেশবপুর এলাকা। এর মাত্রা এতটাই যে, এক কিলোমিটার দূরে লোহা ও টিনের অংশ উড়ে গেছে। বড় বড় লোহার টুকরো বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কারখানার ভেতর সিলিন্ডার এদিক-ওদিকে ছড়িয়ে আছে। মূল প্ল্যান্টের ছাদ উড়ে গেছে। আশপাশের ভবন ও কাঁচা ঘর-বাড়ির চালসহ অনেক কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. লোকমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিস্ফোরণে আমার বাড়িসহ এলাকার অনেক ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসার জানালার কাঁচ, টিন, সানশেড ধসে গেছে। সবাই আতঙ্কে আছেন।'

বর্তমানে পুরো এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। 

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

1h ago