টঙ্গীতে দগ্ধ ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের দুজনের শরীরের শতভাগ পুড়ে গেছে: বার্ন ইনস্টিটিউট

কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের পর বিস্ফোরণ হলে ভেতরে থাকা এক ফায়ার সার্ভিস কর্মী হামাগুঁড়ি দিয়ে বের হয়ে আসছেন। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

টঙ্গীতে কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ৪ ফায়ার সার্ভিস কর্মীর দুজনের শরীরের শতভাগ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ।

বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টঙ্গীতে দগ্ধ দুজন ফায়ার ফাইটারের শরীরের শতাভাগ পুড়ে গেছে। আরেকজনের শরীরের ৪২ শতাংশ দগ্ধ।'

আজ সোমবার দুপুরে টঙ্গী সাহারা মার্কেটের সেমিপাকা টিনশেড গোডাউনে এ আগুনের ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণের সময় বিস্ফোরণ হলে ফায়ার সার্ভিসের ৪ সদস্যসহ মোট ৫ জন দগ্ধ হন। 

তারা হলেন—ফায়ার সার্ভিসকর্মী শামীম আহমেদ (৪২), জয় হাসান (২৮), নুরুল হুদা (৪০), খন্দকার জান্নাতুল নাইম (৩৮) ও দোকান কর্মচারী আল-আমিন হোসেন (২৮)।

তিনি জানান, কেমিক্যাল গোডাউনে সোডিয়াম জাতীয় দ্রব্য ছিল। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে গেলে কেমিক্যাল বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহত হন।

আহত ৪ দমকলকর্মীকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে এবং দোকান কর্মচারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়।

বার্ন ইনস্টিটিউটের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. ফজলে রাব্বি জানান, নুরুল হুদা ও শামীম আহমেদের শ্বাসনালীসহ শরীরের শতভাগ পুড়ে গেছে। জয়ের শরীরের ৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর ইনস্পেক্টর খন্দকার জান্নাতুল নাইমের শরীরের ৪২ শতাংশ পুড়ে গেছে। 

নুরুল, শামীম ও জান্নাতুন নাইমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, টিনশেড ভবনে আগুনের মধ্যেই হঠাৎ বিস্ফোরণের ধোঁয়া বের হচ্ছে। এসময় ভেতর থেকে হামাগুঁড়ি দিয়ে এক দমকলকর্মীকে বের হচ্ছেন।

সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে ফায়ার সার্ভিস জানায়, সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, ওই গুদামে সোডিয়াম বাইকার্বোনেট, হাইড্রোক্লোরিক এসিড, ব্লিচিং পাউডার, ব্যাটারি, স্টোন ও সোডার মতো কেমিক্যাল যত্রতত্রভাবে রাখা হয়েছিল, যা নিরাপত্তা বিধি মেনে করা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'যেহেতু এটা কেমিক্যালের আগুন, পুরোটা নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। নেভার পরও কখনো আগুন জ্বলে উঠছে। আমরা এখনো কাজ করছি। আমাদের লোকজন ভেতরে কাজ করছে।'

Comments