ধানখেতে গরু, বৃদ্ধ মালিকের কান কেটে ফেললেন প্রতিবেশীরা

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় ধানখেতে গরু ঢুকে পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চালানো হামলায় প্রতিবেশীর দায়ের কোপে বাম কান কেটে ঝুলে গেছে নগেন্দ্র কুমার ঘোষ (৭২) নামের এক বৃদ্ধের।

গতকাল শুক্রবার উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের পুষাইনগর গ্রামের ধলিয়ার হাওরে এই ঘটনা ঘটে।

বৃদ্ধ নগেন্দ্র কুমার একজন শহীদ পরিবারের সদস্য। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় করা মামলায় আজ শনিবার সন্ধ্যায় ২ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে নগেন্দ্র ঘোষের একটি গরু ধলিয়ার হাওরে প্রতিবেশী মাক্কু মিয়াদের ধানখেতে ঢুকে পড়ে। পরে তারা গরুটি আটকে রাখেন। খবর পেয়ে গরুটি ছাড়িয়ে আনতে গেলে মাক্কু বাধা দেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মাক্কুসহ তার আত্মীয়স্বজনরা দা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে নগেন্দ্র ঘোষের ওপর হামলা চালান। এ সময় ধারালো দায়ের কোপে নগেন্দ্র কুমারের বাম কান কেটে ঝুলে যায়। এ ছাড়া তার শরীরের অন্যান্য জায়গাও কোপ লাগে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, এ সময় নগেন্দ্র কুমারের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে সিলেটে পাঠানো হয়।

গতকাল রাতেই নগেন্দ্র কুমারের স্ত্রী অনিতা রানী ঘোষ বাদী হয়ে মাক্কুসহ ৪ জনের জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করে কুলাউড়া থানায় মামলা করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত মাক্কু মিয়া ও তার বাবা চান মিয়াকে (৬৪) গ্রেপ্তার করা হয়।

এলাকাবাসীর ভাষ্য, নরেন্দ্র কুমার একজন শহীদ পরিবারের সন্তান। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় তার বাবা নরেশ ঘোষসহ একই পরিবারের ১৪ জন সদস্য নিহত হন।

নরেন্দ্র কুমারের শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে আজ সন্ধ্যায় তার জ্যাঠাতো ভাই অরবিন্দু ঘোষ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তার কেটে যাওয়া কানটি ব্যান্ডেজ করে রাখা হয়েছে। এখনো জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুছ ছালেক এই ঘটনার বিষয়ে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রেপ্তার ২ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

6h ago