কারিগরি বোর্ড

পরীক্ষা না দিলেও ‘অরিজিনাল সার্টিফিকেট’ দিতে পারতেন তিনি

গ্রেপ্তার কারিগরি বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

পরীক্ষা যেমনই হোক, ফলাফল পাস বা ফেল যা-ই হোক না কেন, এমনকি পরীক্ষায় না বসলেও 'অরিজিনাল সার্টিফিকেট' দিতে পারতেন তিনি।

পরীক্ষার্থীর খুশিমতো জিপিএ উল্লেখ করে দিতে পারতেন তিনি। আরও মজার বিষয় হলো, কারিগরি বোর্ডের এসএসসি-এইচএসসির এই সার্টিফিকেটগুলো অনলাইনে যাচাই করতে গেলেও কোনো সমস্যা পাওয়া যেত না। 

কারণ ওই সার্টিফিকেটগুলোর তথ্য বোর্ডের সার্ভারের ডেটাবেজেও সংযুক্ত করা থাকত। আর এই কাজগুলো করতেন কারিগরি বোর্ডের এক সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান।

শামসুজ্জামানের বাসায় আজ ভোরে ডিবি অভিযান চালায়। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিটি সার্টিফিকেটের জন্য তিনি ১৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতেন। গত কয়েক বছর ধরে এমন অন্তত ৫ হাজার সার্টিফিকেট সরবরাহ করেছেন তিনি।

অবশেষে আজ সোমবার ভোরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজ বাসা থেকে শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তার এক সহযোগী ফয়সালকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মশিউর রহমান এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, শামসুজ্জামানের সরবরাহ করা সার্টিফিকেটগুলো আসল সার্টিফিকেটের মতো। পরীক্ষা দেয়নি এমন লোকের কাছেও তিনি সার্টিফিকেট বিক্রি করতেন।

ডিবি জানায়, শামসুজ্জামান বোর্ড থেকে সার্টিফিকেটের কাগজ চুরি করে ভাড়া করা ঘরে ওইসব ভুয়া সার্টিফিকেট প্রিন্ট করতেন। পরে তিনি সার্টিফিকেটের বিস্তারিত অনলাইনে আপলোড করে বিক্রি করতেন।

এ ঘটনায় আর কারা জড়িত তার তদন্ত চলছে বলে ডিবি জানিয়েছে।

গতকাল অভিযানের পর গ্রেপ্তার শামসুজ্জামান সাংবাদিকদের   বলেন, তিনি আরেক সিস্টেম অ্যানালিস্টের মাধ্যমে সার্টিফিকেট তৈরি করতে শিখেছেন।

এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৫ হাজার সার্টিফিকেট বা মার্কশিট তৈরি করে বিক্রি করেছেন এবং লাভের টাকা আরও কয়েকজনের সঙ্গে ভাগ করেছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, 'অনলাইনে সার্টিফিকেট আপলোড করতে শামসুজ্জামানের মাত্র ১০ মিনিট সময় লাগত। অসংখ্য অভিযোগ পাওয়ার পর ডিবির এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য সার্টিফিকেটের জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শামসুজ্জামান তার কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে সার্টিফিকেট দেন।'

'বেশি টাকা দিলে, বেশি জিপিএসহ সার্টিফিকেট দিতেন তিনি,' বলেন ডিবিপ্রধান।

ভুয়া সার্টিফিকেটধারীদের অনেকেই উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন বলে জানায় ডিবি।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

6h ago