বেতন ৬৫ হাজার, সম্পদ ৫ কোটির বেশি

তার মাসে বেতন বড়জোর ৬৫ হাজার টাকা। অথচ এই আয়ের বিপরীতেই সাবেক এক ওসির বিরুদ্ধে নিজের, স্ত্রী ও স্বজনদের নামে প্রায় সোয়া পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। তিনি ধানমন্ডি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম আলী মিয়া।

দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর সম্পদ জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন।

নবম জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী, একজন পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার ওসির মূল বেতন ২২ হাজার টাকা। অন্যান্য ভাতাসহ মাসিক আয় দাঁড়ায় ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা, যা বছরে ৮ লাখ টাকার বেশি নয়।

তবে দুদকের অভিযোগ, পুলিশের এই কর্মকর্তার পরিবারের নামে থাকা সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

একরাম আলী মিয়া ২০১৮ সালে হাজারীবাগ থানার ওসি এবং পরবর্তীতে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ধানমন্ডি থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি ফরিদপুরে সিআইডির পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।

দুদকের নথি অনুসারে, একরামের নিজের নামে ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট, বাড্ডায় তিন কাঠা এবং গোপালগঞ্জে সাড়ে সাত শতক জমি রয়েছে। তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা মুক্তার নামে রয়েছে ধানমন্ডিতে দুটি ফ্ল্যাট এবং রাজধানীর খিলক্ষেতে ৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা মূল্যের একটি ছয়তলা আবাসিক ভবন। এ ছাড়াও তার শাশুড়ির নামে ধানমন্ডিতে একটি এবং কেরানীগঞ্জে এক আত্মীয়ের নামে আরেকটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

তদন্তকারীরা বলছেন, একরাম তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রকৃত বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে এসব সম্পদ রেজিস্ট্রি করেছেন।

আদালতে আবেদনে দুদক উল্লেখ করে, একরাম ও তার স্ত্রী অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ পাচার বা হস্তান্তর করে ফেলতে পারেন বলে তাদের কাছে তথ্য ছিল। এতে মামলার তদন্ত ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা ছিল।

দুদকের সহকারী পরিচালক আলিউস হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তদন্ত এখনো চলছে।'

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে একরাম আলী মিয়া কোনো ধরনের অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, তার সব সম্পদই আয়কর নথিতে ঘোষিত এবং স্ত্রীর নামে থাকা সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। তিনি বলেন, যেহেতু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, তাই এ বিষয়ে আমার কথা না বলাই সমীচীন।

অন্য দুই অভিযুক্ত তানিয়া আক্তার ও ইমদাদুল হকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আমাদের কোনো আত্মীয় বলে মনে পড়ছে না। আমরা কিছু জমি বিক্রি করেছিলাম, তারা হয়তো সেই ক্রেতা হতে পারেন।

Comments

The Daily Star  | English
Dhaka air turns unhealthy even before dry season

Dhaka air turns unhealthy even before dry season

With the dry season approaching, Dhaka city’s air quality has once again slipped to an unhealthy level, underscoring the inadequacy of the limited measures taken by the authorities to curb air pollution.

12h ago