জলাশয় ভরাট করে ‘সানভ্যালী’ আবাসন প্রকল্প, বেলার লিগ্যাল নোটিশ

স্বদেশ প্রপার্টিস লিমিটেডের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

রাজধানীর বাড্ডা, সাতারকুল ও গজারিয়া মৌজায় ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) চিহ্নিত জলাশয় ও সাধারণ প্লাবনভূমি ভরাট করে 'সানভ্যালী' আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ বন্ধের দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।

আজ মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও উপপরিচালক; রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান; প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ; ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক; ঢাকার জেলা প্রশাসক; এবং পুলিশ সুপার; স্বদেশ প্রোপার্টিস লিমিটেডের সানভ্যালী আবাসন প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর নোটিশ পাঠানো হয়।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বদেশ প্রোপার্টিস লিমিটেড 'সানভ্যালী' নামে আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বৈধ অনুমোদন ছাড়াই চলছে বালু ভরাট ও প্রকল্পের প্লট বিক্রির প্রচারণা।

সানভ্যালী আবাসন প্রকল্পের লে-আউট অনুযায়ী, অনুমোদিত জমির পরিমাণ প্রায় ১১৯ একর। স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, আবাসন প্রকল্পটি প্রায় ৪৩১ একর জমি ভরাট করেছে। অতিরিক্ত ভরাট করা জমির পুরোটাই, অর্থাৎ প্রায় ৩১২ একরই জলাশয় এবং সাধারণ প্লাবন ভূমি। এর মধ্যে মেরুলের খাল ও নন্দীপাড়া খালের সংযোগ খালটিও ভরাট করেছে স্বদেশ প্রোপার্টিস লিমিটেড।

দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় জলাশয় হিসেবে চিহ্নিত ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন এবং জলাশয় বালু দিয়ে ভরাট করে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণের সুযোগ নেই। টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৩ অনুযায়ী যে কোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করতে হলে রাজউকের অনুমোদন এবং আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে অবস্থান ও পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এছাড়া, বাংলাদেশ ল্যান্ড হোল্ডিং (লিমিটেশন) অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ১০০ বিঘার (প্রায় ৩৩ একর) বেশি জমি নিজ দখলে রাখতে পারবে না।

দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দুটি রায়ের কথা উল্লেখ করেছে বেলা, যেখানে জলাশয় সংরক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেলা জানায়, সর্বোচ্চ আদালতের এমন গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও জলাশয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে না পারা দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবজ্ঞা ও উদাসীনতার পরিচায়ক।

নোটিশে ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) চিহ্নিত সব জলাশয় ও সাধারণ প্লাবনভূমি ভরাট বন্ধ এবং ভরাট করা অংশ অনতিবিলম্বে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানিয়েছে বেলা।

একইসঙ্গে স্বদেশ প্রোপার্টিস লিমিটেডের 'সানভ্যালী আবাসন' প্রকল্পটিকে অবৈধ ঘোষণা করে প্রকল্পটির সব সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড অনতিবিলম্বে অপসারণ এবং এই আবাসন প্রকল্পের সব কার্যক্রম বন্ধ ও পরিবেশ ও প্রতিবেশ ক্ষতি নিরূপণ করে স্বদেশ প্রোপার্টিস লিমিটেডের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে।

নোটিশ পাঠানোর সাত দিনের মধ্যে অগ্রগতি অবহিত করার অনুরোধ জানিয়েছে বেলা। তা না হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেবে সংস্থাটি।

Comments

The Daily Star  | English
chocolate trend in Bangladesh

Mimi, nostalgia and new bites

Local, global brands offer treats for all budgets, with young people driving the demand

13h ago