নরসিংদীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিনেও গুলিতে নিহত ১

নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিনেও গুলিবিদ্ধ হয়ে এক নারী নিহত হয়েছেন।
আজ শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে আলোকবালীর বীরগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ফেরদৌসী বেগম (৪৫) বীরগাঁও গ্রামের রায়েছ আলীর স্ত্রী।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার এই দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইদন (৫৫) মিয়া নিহত হন।
স্থানীয়রা জানান, আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী ও বহিষ্কৃত সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার, বালু উত্তোলন ও দখলদারিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। শাহ আলম চৌধুরী ও কাইয়ুম মিয়া পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করেন। উভয় গ্রুপের মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও রয়েছেন।
গতকাল ভোরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী ইদন মিয়া নিহত হন। একই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার আইয়ুব খান সরকারের ওপর হামলা চালায় বিএনপি নেতাকর্মীরা।
সংঘর্ষের বিষয়ে আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপি আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী বলেন, 'আজ দুপুরে ইউনিয়ন বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায়। সন্ত্রাসী কাইয়ুমের কর্মী শিতলের গুলিতে আমার কর্মী ফেরদৌসী বেগম ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। আমরা কাইয়ুমের বিচার দাবি করছি।'
তবে আব্দুল কাইয়ুম মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দীপু ও বর্তমান সভাপতি আসাদ উল্লাহর লোকজন অবৈধ অস্ত্রে গুলি ভরতে গিয়ে ওই নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এ ঘটনায় আমাদের দলের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। গতকাল আমার কর্মী ইদন মিয়াকে গুলি করে হত্যার পর ধারাবাহিক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকজন। আমাদের ওপর দায় চাপানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আশাকরি প্রশাসন সঠিক কারণ খুঁজে বের করবে।'
এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, 'গতকাল আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জেরে একজন খুন হয়েছেন। একই ঘটনার ধারাবাহিকতায় আজ আরেকজন খুন হয়েছেন। কে বা কারা খুনের সঙ্গে জড়িত, সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। ভুক্তভোগীর কানের নিচের অংশে বড় ধরনের গর্ত রয়েছে। সেটা প্রাথমিকভাবে গুলি মনে হচ্ছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া বলা মুশকিল।'
তিনি আরও বলেন, 'ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হত্যার ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি।'
Comments