ময়মনসিংহে মর্গে তরুণীর মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার, যুবক কারাগারে

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে এক নারীর মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে আবু সাঈদ (১৯) নামে এক মর্গ সহকারীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, প্রায় তিন বছর ধরে হালুয়াঘাট থানা থেকে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে নিয়ে যাওয়ার কাজ করে আসছিলেন সাঈদ। মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে গতকাল আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ২০ অক্টোবর সাঈদ হালুয়াঘাট থানা থেকে এক নারীর মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে নিয়ে যান। অভিযোগ রয়েছে, আগের দিন আত্মহত্যায় ওই নারীর মৃত্যু হয়। মরদেহ মর্গে আনার সময় তার সঙ্গে পুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) ও দুইজন কনস্টেবল ছিলেন। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মরদেহটি মর্গে রাখা হয়।

তবে এর দুই ঘণ্টা পর সাঈদ একা ফিরে আসেন এবং সে সময় আর কেউ উপস্থিত ছিল না। অভিযোগ ওঠে, ওই সুযোগে তিনি মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করেন।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এএনএম আল মামুন ময়নাতদন্ত করতে মর্গে প্রবেশ করলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। মামুন দেখেন, মরদেহের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে এবং মরদেহে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের আলামত রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন।

'বিষয়টি জানার পর আমরা ওই দিন সন্ধ্যায় হালুয়াঘাট থেকে সাঈদকে আটক করি,' বলেন এএসপি মামুন।

ডা. মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, সাঈদের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ফরেনসিক নমুনাগুলো ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

'যদি একাধিক ডিএনএ প্রোফাইল শনাক্ত হয়, সে ক্ষেত্রে প্রত্যেক মর্গ সহকারী এবং মরদেহ পরিবহনে সম্পৃক্ত সবার ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে,' যোগ করেন তিনি।

হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুল ইসলাম হারুন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাঈদ তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।

ওই নারীর মৃত্যুর ঘটনায় এর আগেই হালুয়াঘাট থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর (ইউডি) মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান উপপরিদর্শক জামাল মিয়া। সাঈদের স্বীকারোক্তির পর বুধবার কোতোয়ালী থানায় নতুন করে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়, জানান মামুন।

বিকেলে অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরীফুল হকের আদালতে হাজির করা হলে দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারা অনুসারে সাঈদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। ময়মনসিংহ আদালতে দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক পিএসএম মুস্তাসিনুর রহমান বলেন, 'জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার পর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।'

মর্গের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাজমুল আলম খান মোবাইল ফোনে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

ময়মনসিংহ বার অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শিব্বির আহমেদ লিটন বলেন, 'বিশ্বব্যাপী মর্গে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। মৃতদেহেরও মর্যাদা ও সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে। নিরাপত্তার ঘাটতি এই ভয়াবহ ঘটনার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে কি না, তা কর্তৃপক্ষের খতিয়ে দেখা উচিত।'

Comments

The Daily Star  | English

Fire breaks out at building in Mirpur's Kalshi

Cause of the fire could not be known immediately

20m ago