চুরির অভিযোগে নির্যাতনে ভ্যানচালকের মৃত্যু, কারাগারে ২
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় চুরির অভিযোগে এক ভ্যানচালককে নির্যাতনের পর মৃত্যুর ঘটনায় দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গত ১৭ ডিসেম্বর।
নিহত ভ্যানচালকের নাম ওমর ফারুক হোসেন (৩৯)। তিনি উপজেলার চাঁনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, ২০ ডিসেম্বর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বাবা মোসলেম সরদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ছেলে একটি সিএনজি স্ট্যান্ডের কাছে ভ্যান রেখে প্রাকৃতিক কাজ সেরে আসতে গেলে তাকে ব্যাটারি চুরির মিথ্যা অভিযোগে আটক করা হয়।'
তিনি অভিযোগ করেন, 'আমার ছেলের হাত ও পায়ে পেরেক ঠুকে নির্যাতন করা হয় এবং তাকে নদীর পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়।'
তিনি বলেন, 'ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বদলে এসিল্যান্ড আমার ছেলেকে জেলে পাঠিয়েছেন। তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। আমি আমার ছেলের হত্যার সঠিক বিচার চাই।'
তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, 'ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওমর ফারুককে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারণ তার কাছ থেকে এক প্যাকেট গাঁজা জব্দ করা হয়েছিল।'
তিনি বলেন, 'স্থানীয় লোকজন তাকে মারধর করেছিল। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরদিন সে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং রামেকে নেওয়া হলে শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।'
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেওয়া সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, 'ওমর ফারুক কিডনি রোগ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন এবং কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ার পরই তার মৃত্যু হয়।'
তবে চরম নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে এমন কোনো আলামত তিনি পাননি।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওমর ফারুককে কারাগারে পাঠানো হয় এবং পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রামেকে স্থানান্তর করা হয়।
তিনি আরও জানান, মারধরের অভিযোগে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আটক করা দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে পেরেক দিয়ে আঘাত বা নির্যাতনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান।

Comments