ভোলায় জমি নিয়ে বিরোধে ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ভোলায় পূর্ব বিরোধের জেরে এক ছাত্রদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, জমি নিয়ে বিরোধের কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর এলাকায় নিহতের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রেজওয়ান আমিন সিফাত (২৫) রাজাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ক্লোজার বাজার এলাকার বাসিন্দা আলাউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে।
তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও রাজাপুর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন। বর্তমানে ওই ইউনিয়নে ছাত্রদলের কোনো কমিটি নেই।
ভোলা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. জুনায়েদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের বাবা আলাউদ্দিন হাওলাদার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হন সিফাত।
'বাড়ির সামনের সড়কে পৌঁছালে পাঁচ থেকে ছয়জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় সিফাতকে উদ্ধার করে ভোলা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।'
ডা. জুনায়েদ জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিফাতকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
তিনি বলেন, 'পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত পাওয়া যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।'
ভোলা সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জিয়াউদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছায় এবং ঘটনাস্থলেও একটি টিম পাঠানো হয়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
আলাউদ্দিন হাওলাদার অভিযোগ করেন, 'আমার ভাই, সাবেক ইউপি সদস্য মো. হেলাল হাওলাদারের সঙ্গে গত ১৭ বছর ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। দীর্ঘদিনের জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরেই আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।'
তিনি দাবি করেন, একই বিরোধকে কেন্দ্র করে আগেও একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং জমিসংক্রান্ত একটি মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, 'আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হেলাল হাওলাদার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের পরিবারকে হয়রানি করে আসছিলেন।'
অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান নিহতের পরিবার।
এ ঘটনার পর মো. হেলাল হাওলাদার ও তার ছেলে পলাতক আছেন বলে জানিয়েছেন ওসি মনিরুল ইসলাম।

Comments