বগুড়া-৭

এমপি হওয়ার আগে মাসিক আয় ছিল ৪১৭ টাকা, এখন স্ত্রীও কোটিপতি

বগুড়া-৭ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম বাবলু। ছবি: জাতীয় সংসদের ওয়েবসাইট থেকে

পাঁচ বছর আগেও যার মাসিক যায় ছিল ৪১৭ টাকা, বর্তমানে তার মাসিক আয় ৩ লাখ ২ হাজার ২৮ টাকা। বাৎসরিক আয় ৩৬ লাখ টাকার বেশি। পাঁচ বছর আগে তার ৫০ হাজার টাকা দামের একটি মোটরসাইকেল ছিল। এখন আছে ১ কোটি ৪ লাখ টাকা দামের দুটি গাড়ি।

এই সম্পদ বৃদ্ধির হিসাব দিয়েছেন বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু ওরফে শওকত আলী গোলবাগী। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে তার আয় বৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া যায়।

শুধু তাই নয় পাঁচ বছর আগে স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পত্তি না থাকলেও বর্তমানে তার আছে একটি বাড়ি যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ১ লাখ টাকার বেশি। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এভাবেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন স্বামী-স্ত্রী।

বাবলু দম্পতির সম্পদ-বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে তার আত্মীয়স্বজনের আর্থিক সামর্থ্য। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তার জামাতা জাকির হোসেন নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য দিতে চেয়েছিলেন পাঁচ লাখ টাকা। এবার হলফনামায় লেখা হয়েছে জাকির হোসেন স্বেচ্ছায় দেবেন ২০ লাখ টাকা।

পাঁচ বছর আগে বাবলু পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন সাংবাদিকতা এবং ব্যবসা। সাংবাদিকতা করে তখন তার কোনো আয় ছিল না। ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় ছিল দুই হাজার টাকা এবং কৃষি থেকে আয় ছিল তিন হাজার টাকা। ব্যাংকে টাকা ছিল ৩০ হাজার আর নগদ ছিল ৩০ হাজার। চলাফেরা করতেন একটি পুরোনো মোটরসাইকেলে।

বর্তমানে বাড়ি ভাড়া থেকে বাবলু বছরে যায় করেন ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে বছরে আসে ১১ লাখ ১৫ হাজার টাকা এবং সংসদ সদস্য হিসেবে প্রাপ্ত অর্থ ও অন্যান্য উৎস থেকে বছরে পান ২৩ লাখ ২৪ হাজার টাকার বেশি। তার আছে একটি নিশান এক্সট্রেইল এসইউভি যার মূল্য ১৮ লাখ টাকা এবং আর একটি ল্যান্ডক্রুজার যার মূল্য ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে তার নগদ অর্থ আছে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

পাঁচ বছর আগে স্ত্রীর কোনো নগদ অর্থ না থাকলেও বর্তমানে রয়েছে আড়াই লাখ টাকা।

স্থাবর সম্পদ হিসেবে পাঁচ বছর আগে শাজাহানপুর মাঝিড়ায় বাবলুর একটি মাটির ও সেমিপাকা বাড়ি ছিল যার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল তিন লাখ টাকা। বর্তমানে সাভারে নিজের নামে তার একটি এপার্টমেন্ট আছে যার মূল্য ধরা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা।

পাঁচ বছর আগে স্ত্রীর কোনো সোনার গয়না না থাকলেও এবার তার নিজের ছয় ভরি স্বর্ণ ও বৈবাহিক সূত্রে পাওয়া ১০ ভরি স্বর্ণের কথা উল্লেখ করেছেন।

রেজাউল করিম বাবলু ২০১৮ সালে বগুড়া-৭ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। সেবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হয়ে যায় বিএনপির সব প্রার্থীর প্রার্থিতা। এই আসনটিতে আগে বিএনপি থেকে নির্বাচন করতেন খালেদা জিয়া (১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত)। খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় সেবার নির্বাচন করতে পারেননি। নির্বাচনের ঠিক এক দিন আগে বিএনপির সমর্থন পান বাবলু। পরে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। পরে অবশ্য বিএনপির রাজনীতিতে তার কোনো অংশগ্রহণ দেখা যায়নি। তিনি আবারো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Panic grips NBR officials

The relief that followed the end of a disruptive strike by tax officials at the National Board of Revenue has quickly given way to anxiety and regret, as the government started a clampdown on those involved.

12h ago