আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন পলক

swecchasebok-league-special-extended-meeting_collected_ds
স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় বক্তব্য দিয়েছেন জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক। ছবি: স্টার

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন নাটোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক।

আজ সোমবার বিকেলে সিংড়া মডেল মসজিদের পাশে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি নৌকার পক্ষে ভোট চান।

দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার জন্য নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক বলেন, 'সাত তারিখ সারাদিন নৌকা মার্কায় ভোট দিন।' অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের নৌকার পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য শপথও করান তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'বর্ধিত সভার মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৩ আসনে নৌকা মার্কাকে কীভাবে বিজয়ী করা যায়।' নৌকা মার্কাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করার জন্য ঘরে ঘরে ভোট চাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিগত নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করার কারণে সিংড়ার নাগরিকরা উন্নয়ন উপহার পেয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন পলক।

এর আগে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা সিংড়া শহরে নৌকা মার্কার পক্ষে স্লোগান দিয়ে মিছিল করেন। মিছিলটি শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শুরু হয়ে সারা শহর ঘুরে আবার পৌরসভার সামনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভায় গিয়ে শেষ হয়।

বিষয়টি নিয়ে নাটোর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সিংড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আওয়ামী লীগের প্রার্থী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক নির্বাচনী আচরণবিধি মানছেন না। নৌকার পক্ষে প্রকাশ্যে মিছিল ও শোডাউন করছেন। কিন্তু নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এমনকি তার বিরুদ্ধে কমিশনের কর্মকর্তাদের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।'

বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক প্রতিনিয়ত আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে মিছিল করছেন। কিন্তু কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।'

'উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং থানার সামনে দিয়েও তিনি মিছিল করছেন, নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। কিন্তু কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সবার চোখের সামনেই এসব অনিয়ম হচ্ছে। প্রশাসন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে', বলেন তিনি।

swecchasebok-league-special-extended-meeting2_collected_ds
বিশেষ বর্ধিত সভার আগে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা সিংড়া শহরে নৌকা মার্কার পক্ষে স্লোগান দিয়ে মিছিল করেন। ছবি: স্টার

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার মাহমুদা খাতুন ডেইলি স্টারকে বলেন, কোনো ধরনের জনসমাবেশ, মিছিল কিংবা রাজনৈতিক সভায় ভোট চাইলে সেটা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। বিধি অনুযায়ী, এখন কোনো প্রার্থী ভোট চাইতে পারবেন না। প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রতীকের পক্ষে স্লোগান দেওয়া বা ভোট চাওয়ার সুযোগ নেই। আচরণবিধির বিষয়ে আমাদের অবস্থান খুবই কঠোর।

ইতোমধ্যে আপনাদের কাছে মৌখিক অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এবং আপনাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে, জানতে চাইলে মাহমুদা খাতুন বলেন, কারও প্রতি পক্ষপাত করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও পাবনার সহকারী জজ মো. গোলাম মোস্তফা ডেইলি স্টারকে বলেন, জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক একবার নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। আমরা তাকে শোকজ করেছিলাম। তিনি জবাবে ক্ষমা চেয়েছেন। আবারও যদি তিনি একই কাজ করে থাকেন, তাহলে বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক ডেইলি স্টারকে বলেন, আমি আচরণবিধি মেনে চলছি। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম আচরণবিধি মানছেন না। আচরণবিধির বিষয়টি দেখার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার আছেন, তাই আমি কোনো অভিযোগ করছি না।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভায় নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'প্রত্যেক সংগঠনের বর্ধিত সভা করা হচ্ছে এবং ভোট চাওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ভোট তো আমি সাধারণ মানুষের কাছে চাচ্ছি না। আমরা চাচ্ছি আমাদের কর্মীদের কাছে। কর্মীরা কীভাবে ভোট চাইবে, কী কী বলে ভোট চাইবে, এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এসব যদি কমিশনের কর্মকর্তারা নিষেধ করেন, তাহলে আমরা করব না।'

Comments

The Daily Star  | English

FY26 Budget: Subsidy spending to hold steady

The budget for fiscal 2025-26 is likely to be smaller than the current year’s outlay, but subsidy spending is expected to remain almost unchanged at Tk 1,15,741 crore.

9h ago