২০০৮ সালের পর এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি দলের অংশগ্রহণ

মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি আ. লীগের কেউ, ইনুর দলের প্রার্থী ৭

৫৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৫১টি দলের প্রার্থীরা আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় তাদের কেউই মনোনয়নপত্র জমা দেননি। অর্থাৎ, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের বাইরে রয়েছে।

এ ছাড়া, আরও সাতটি দলের কেউ মনোনয়ন জমা দেননি। এই দলগুলোর মধ্যে অন্তত পাঁচটি দল ২০০৮ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের মিত্র ছিল। সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।

নির্বাচন কমিশনের নথিতে দেখা যায়, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-ইনু) থেকে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে দলটির নেতারা এই দাবি অস্বীকার করেছেন।

সোমবার সকালে জাসদ (ইনু) ঘোষণা দেয় যে, তারা নির্বাচন বর্জন করছে। তাদের অভিযোগ, সরকার একটি 'অসাংবিধানিক গণভোট' এবং 'একতরফা সংসদ নির্বাচন' আয়োজন করছে।

দলের দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, 'আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না। আমাদের সভাপতি জেলে আছেন, আর সাধারণ সম্পাদক বহুদিন ধরে অনুপস্থিত। তাহলে কে এই মনোনয়ন দিয়েছে?'

নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা রুহুল আমিন মল্লিক সাংবাদিকদের জানান, এই তথ্যগুলো প্রার্থীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই সংগ্রহ করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমেদ বলেন, 'যাচাই-বাছাইয়ের সময় বিষয়টি দেখা হবে।'

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (আওয়ামী লীগের মিত্র) এবং তৃণমূল বিএনপি থেকে কেউ মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি।

এবার অন্তত ৫০টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, যা ২০০৮ সালের পর থেকে যেকোনো নির্বাচনের তুলনায় বেশি। ২০০৮ সাল থেকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তার মিত্রসহ মোট ২৮টি দল অংশ নিয়েছিল।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ৩৯টি দল অংশ নেয়, তবে সে নির্বাচন আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির অভিযোগে ব্যাপক সমালোচিত হয়।

২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রায় সব বিরোধী দল বর্জন করায় মাত্র ১২টি দল অংশ নেয়।

২০০৮ সালে ৩৮টি দল, ২০০১ সালে ৫৪টি দল, ১৯৯৬ সালের জুনে ৮১টি দল, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৪১টি দল, ১৯৯৫ সালে ৭৫টি দল, ১৯৮৮ সালে ৮টি দল (বিএনপি ও আওয়ামী লীগসহ বড় দলগুলো বর্জন করেছিল), ১৯৮৬ সালে ২৮টি দল, ১৯৭৯ সালে ২৯টি দল এবং দেশের প্রথম নির্বাচন ১৯৭৩ সালে ১৪টি দল অংশ নেয়।

এবারের নির্বাচনে দলভিত্তিক প্রার্থীর সংখ্যা

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী—

বিএনপি: ৩৩১ জন

জামায়াতে ইসলামী: ২৭৬ জন

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ: ২৬৮ জন

জাতীয় পার্টি (জি এম কাদের): ২২৪ জন

গণ অধিকার পরিষদ: ১০৪ জন

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস: ৯৪ জন

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি): ৬৫ জন

আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি): ৫৩ জন

ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ: ৪২ জন

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ): ৪১ জন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি): ৪৪ জন

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট: ২৭ জন

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (রব): ৩১ জন

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল–বাসদ (মার্ক্সবাদী): ৩০ জন

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি): ২৪ জন

জনতার দল: ২৩ জন

গণফোরাম: ২৩ জন

ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ: ২২ জন

বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি: ২১ জন

বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট): ২০ জন

বাংলাদেশ লেবার পার্টি: ১৯ জন

বাংলাদেশ কংগ্রেস: ১৮ জন

গণসংহতি আন্দোলন: ১৮ জন

আমজনতার দল: ১৭ জন

বাংলাদেশ মুসলিম লীগ: ১৪ জন

বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি): ১৩ জন

জাতীয় পার্টি: ১৩ জন

নাগরিক ঐক্য: ১১ জন

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন: ১১ জন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট: ৯ জন

বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি): ৯ জন

বাংলাদেশ জাসদ: ৯ জন

জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম): ৮ জন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম): ৮ জন

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি: ৭ জন

বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল): ৭ জন

জাকের পার্টি: ৭ জন

বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি: ৬ জন

গণফ্রন্ট: ৬ জন

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (সিরাজুল): ৫ জন

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ: ৫ জন

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা): ৩ জন

ইসলামী ঐক্যজোট: ৩ জন

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি: ৩ জন

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি–বিজেপি (পার্থ): ৩ জন

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি: ২ জন

গণতন্ত্রী পার্টি: ১ জন

বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ: ১ জন

বাংলাদেশ ন্যাপ – ১ জন

বাংলাদেশ সমঅধিকার পার্টি: ১ জন

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

2h ago