‘ভুল তথ্য’ বা ‘শঙ্কা’ এড়াতে বিদেশি মিশনে চিঠি: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

শাহরিয়ার আলম
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ফাইল ফটো

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, সরকার ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি মিশনের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করার তাগিদ অনুভব করেছে, যেন কোনো 'ভুল তথ্য' বা 'শঙ্কা' না থাকে।

তিনি বলেন, 'এটা নতুন নয়, দেশে কিছু ঘটলে আমরা সবাইকে জানিয়ে রাখি। এটা স্বাভাবিক কূটনৈতিক চর্চার মধ্যে পড়ে। অতীতেও এটা হয়েছে।'

পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেন ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি মিশনে নথি পাঠিয়েছেন, এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব কথা জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি সাতদিনই বিএনপি তাদের (কূটনীতিকদের) সঙ্গে বৈঠক করেছে। দেশে নির্বাচনের আগে এ ধরনের কর্মসূচি নিয়ে যেন কোনো 'ভুল তথ্য' বা 'শঙ্কা' না থাকে, তাই আমাদের উচিত প্রকৃত তথ্যটা তাদের (কূটনীতিকদের) জানিয়ে দেওয়া।

তিনি বলেন, বিএনপি দেশে-বিদেশে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। তারা ১০ ডিসেম্বর বেছে নিয়েছিল কারণ বড় কিছু দেশ ৯ ডিসেম্বর নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছিল।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি লবিস্টদের জন্য কোটি কোটি ডলার ও পাউন্ড বিনিয়োগ করেছে, যারা তাদেরকে আশ্বস্ত করেছে যে নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে।

তিনি বলেন, 'এটিকে কেন্দ্র করে তারা একটি সেলিব্রেশনের মুডে ছিল এবং প্রমাণ করতে চেয়েছিল যে সরকারের কোনো বন্ধু নেই।'

শাহরিয়ার বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ডিএমপি কমিশনার এবং অন্যান্যরা বলেছে যে কোনোভাবেই বিএনপির সমাবেশে যেন বিশৃঙ্খলা না হয়, সরকার সে নিশ্চয়তা দেবে। কিন্তু তারা সেটা না মেনে অতি উৎসাহিত হয়ে ৭ তারিখ থেকে রাস্তাঘাট ব্যারিকেড করে দখল করার চেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বিএনপিকে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল জনসমাবেশের জন্য তাদের জনসভা করার অনুমতি দিয়েছে।

শাহরিয়ার বলেন, 'সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো বিশাল একটি ঐতিহাসিক স্থানে বিএনপি সমাবেশ করতে চায়নি তার প্রথম কারণ হলো-তাদের যে নৈতিক স্খলন হয়েছে তার সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্পিরিট মেলে না। দ্বিতীয়ত, তারা এত পরিমাণ মানুষের সমাবেশ করতে পারবে না।'

তিনি বলেন, রাজনীতি পিকনিকের মতো নয় যে জনগণের চলাচলের রাস্তা অবরোধ করে বাধা সৃষ্টি করা হবে।

১২ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় অবস্থিত সকল বিদেশি মিশন ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের অফিসের সঙ্গে 'বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ক একটি নথি' শেয়ার করেছে।

১৬ ডিসেম্বর গৌরবময় বিজয় দিবসকে সামনে রেখে রাজধানীর নিরাপত্তা, জননিরাপত্তা, সম্পত্তির নিরাপত্তা, জনসাধারণের চলাচল এবং সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব মূল্যায়ন করে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই প্রস্তাব দেয়া হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি অনুসারে, 'সম্ভবত, বিএনপি নেতারা অনুষ্ঠানস্থল থেকে রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল জনসাধারণের চলাচলের ব্যস্ত রাস্তায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করা, যেমন তারা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগে করেছিল।'

এতে উল্লেখ করা হয়, বিএনপি তাদের বেআইনি দাবি আদায়ের জন্য সাধারণ মানুষকে জিম্মি করতে চায়।

ইউএনবির দেখা নথি অনুসারে, বেআইনি ও সহিংস উপায়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের সাংবিধানিক অধিকারের জন্য চাপ দেয়ার জন্য বিএনপি একটি চক্রান্ত করেছে।

পুলিশ জানায়, বিএনপি দলীয় কার্যালয়েও ককটেল পাওয়া গেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি অনুসারে, পরিস্থিতি প্রমাণ করে যে বিএনপির প্রকৃত পরিকল্পনা ছিল নির্ধারিত জনসমাবেশের তিন দিন আগে জোরপূর্বক ও বেআইনিভাবে রাস্তা দখল করা।

পরবর্তীতে বিএনপি তাদের ১০ ডিসেম্বরের সভার জন্য একটি বিকল্প ভেন্যুর (গোলাপবাগ মাঠ) বিষয়ে রাজি হয় এবং কোনো বড় ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

নথিতে আরও বলা হয়েছে, 'এটি মত প্রকাশ ও সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের সদিচ্ছা ও প্রচেষ্টাকে প্রতিফলিত করে।'

Comments

The Daily Star  | English

Nepal PM Oli quits as anti-corruption protests spiral

The Himalayan country has struggled with political instability and economic uncertainty since protests led to the abolition of its monarchy in 2008.

1h ago